তরিকুল ইসলাম রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি ঃ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চলতি জুন মাসেই মৃত্যুর সংখ্যা ৩০০ জন ছাড়িয়ে গেছে। এর প্রায় অর্ধেক মারা গেছেন করোনা পজিটিভ অবস্থায়। কিছু মারা গেছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। করোনা পরবর্তী জটিলতা নিয়েও মারা গেছেন অনেকেই।
সর্বশেষ গতকাল রোববার (২৭ জুন) সকাল ৮টা থেকে সোমবার (২৮ জুন) সকাল ৮টার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ছিল ১০ জন। এ নিয়ে গত ৩১ মে সকাল ৮টা থেকে ২৮ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ৩১১ জনের মৃত্যু হলো।
নতুন করে মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে সাতজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। অন্য সাতজন মারা গেছেন উপসর্গ নিয়ে। করোনা পজিটিভ সাতজনের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চারজন ও তিনজন রাজশাহীর বাসিন্দা ছিলেন। উপসর্গ নিয়ে রাজশাহীর আরও চারজন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁর একজন করে মারা গেছেন।
সোমবার সকালে হাসপাতালের এক প্রতিবেদনে মৃত্যুর এই হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও তিনজন নারী। বয়স বিবেচনায় ৩১-৪০ বছরের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী এবং ষাটোর্ধ্ব পাঁচজন পুরুষ ও একজন নারী মারা গেছেন।
এর আগে গত ১ জুন (সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত) সাতজন, ২ জুন সাতজন, ৩ জুন নয়জন, ৪ জুন ১৬ জন, ৫ জুন আটজন, ৬ জুন ছয়জন, ৭ জুন সাতজন, ৮ ও ৯ জুন আটজন করে; ১০ জুন আটজন, ১১ জুন ১৫ জন, ১২ জুন চারজন, ১৩ জুন ১৩ জন, ১৪ ও ১৫ জুন ১২ জন করে; ১৬ জুন ১৩ জন, ১৭, ১৮ ও ১৯ জুন ১০ জন করে; ২০,২১ ও ২২ জুন ১৩ জন করে, ২৩ জুন ১৬ জন, ২৪ জুন ১৮ জন, ২৫ জুন ১৪ জন, ২৬ জুন ১৭ জন এবং ২৭ জুন ১০ জনের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে করোনা রোগীদের রাখতে একের পর এক সাধারণ ওয়ার্ড ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ ১৪ নম্বর ওয়ার্ডটি করোনা ওয়ার্ড করা হয়েছে। এর ফলে সোমবার সকালে মোট করোনা ডেডিকেটেড শয্যার সংখ্যা বেড়ে ৪০৫টি হয়েছে। তবে সোমবার সকালে মোট রোগী ভর্তি ছিলেন সর্বোচ্চ ৪৪২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিট থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৭ জন। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৭৮ রোগী। এর মধ্যে রাজশাহী থেকে ৫২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ১০ জন, নাটোর থেকে আটজন, নওগাঁ থেকে চারজন, পাবনা থেকে দুজন এবং চুয়াডাঙ্গা থেকে দুজন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
সোমবার সকালে হাসপাতালে রাজশাহীর ৩০৬ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪৯ জন, নাটোরের ৩২ জন, নওগাঁর ৩২ জন, পাবনার ১৫ জন, কুষ্টিয়ার তিনজন, চুয়াডাঙ্গার দুজন, দিনাজপুরের দুজন ও ঢাকার একজন করে রোগী ভর্তি ছিলেন। এদের মধ্যে নমুনা পরীক্ষায় ১৯২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। আর ১৯৪ জন ছিলেন করোনার উপসর্গ নিয়ে।
এ ছাড়া করোনা নেগেটিভ হলেও শারীরিক নানা জটিলতায় করোনা ইউনিটে ছিলেন ৫৬ জন।