শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৩ অপরাহ্ন

স্বপদ ফিরিয়ে পেলেন ধামরাইয়ের চৌহাট ইউপি চেয়ারম্যান পারভীন হাসান প্রীতি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৫ বার পঠিত

স্বপদ ফিরিয়ে পেলেন ধামরাইয়ের চৌহাট ইউপি চেয়ারম্যান পারভীন হাসান প্রীতি

লিটন আহমেদ চন্দন
ধামরাই ( ঢাকা ) প্রতিনিধি:

বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলন থেকে সূত্রপাত। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র – ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবিতে মাঠে নামে সাধারণ ছাত্র – ছাত্রীরা। পরবর্তী সময়ে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে রূপ নেয় সরকার বিরোধী গন আন্দোলন ও সরকার পতন আন্দোলন।

বিগত সরকার তার দলীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে ছাত্র জনতার উপর মারপিট ও হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠেন এর প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ ও অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সরকার পতনের আন্দোলনে অংশ নেন। ৫ই আগষ্ট দুপুর ২টার দিকে শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা পালিয়ে ভারত চলে যান।

পৃথিবীর কোন দেশের সরকার পতনের পর ৩০০ জন এমপি, মন্ত্রী আত্মগোপনে ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি।
বিগত ২০১৬ সাল ও ২০২১ সালের দুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার দলীয় প্রতীক নৌকা মনোনয়ন বানিজ্যের মাধ্যমে দিনের ভোট রাতে, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডারদের মাধ্যমে প্রকাশ্যে সিল মেরে প্রায় ৯০% ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার হিসেবে জয়লাভ করেন।

২০২৪ সালের ৫ই আগষ্টের পর মামলা ও জনরোষের ভয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান, প্যানেল চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন আত্মগোপনে চলে যান এতে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে সেজন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার ইউনিয়ন পরিষদের সকল সেবা কার্যক্রম সচল রাখতে ইউনিয়ন পরিষদ ও জনস্বার্থে অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদেরকে অপসারণ করে প্যানেল চেয়ারম্যান ও প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। সারা বাংলাদেশের ন্যায় ঢাকা জেলা ধামরাই উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নে মধ্যে ১৩ টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হয়। ৩টি ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান ও ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয় আর বাকি ৩টি ইউনিয়ন যেমন ( সূয়াপুর, চৌহাট ও ভাড়াড়িয়া )পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিতি থেকে নিয়মিত অফিস করতে থাকেন।
ধামরাই উপজেলার ২০১৬ সাল ও ২০২১ সালের ১১ ই নভেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চৌহাট ইউপি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে পর পর ২ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন । তার স্বামী মোকসেদ হাসান এর পূর্বে তিন বার এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৬ টি ইউনিয়নে মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও জনদরদী চেয়ারম্যান হিসেবে খ্যাত ছিলেন। মূলত চৌহাট ইউনিয়নের জনগণ তাদের জননন্দিত সাবেক চেয়ারম্যান মোকসেদ হাসান এর ভালবাসার টানে তার স্ত্রী পারভীন হাসান প্রীতি কে বিপুল ভোটে দুই বার নির্বাচিত করেছেন । পারভীন হাসান প্রীতি চেয়ারম্যান হওয়ার পূর্বে বিপুল ভোটে ধামরাই উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে নির্বাচনে জয়ের নায়ক ছিলেন মোকসেদ হাসান। মোকসেদ হাসান ধামরাই উপজেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।

২০২৫ সালের ৩ই মার্চ পর্যন্ত নিয়মিত পারভীন হাসান প্রীতি ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । ৪ই মার্চ ২০২৫ খ্রি: তারিখে জারিকৃত এক পত্রাদেশের মধ্যমে ঐ ৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ( সূতিপাড়া, চৌহাট ও ভাড়াড়িয়া) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে ইউনিয়ন পরিষদ ও জনস্বার্থে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন চৌহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভীন হাসান প্রীতি।

মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশনের মাধ্যমে ১৬ই এপ্রিল ২০২৫ ইং দীর্ঘ ১ মাস ১২ দিন পর ০৫,৪১,২৬০০,০১৭৫৭,০০১,২০২৪-৩০২(৭) নং স্মারকে ঢাকা জেলা প্রশাসকের সাক্ষরকৃত অফিস আদেশে সূতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণের আদেশ স্থগিত করা হয়। এই স্থগিতাদেশের মাধ্যমে চৌহাট ইউনিয়ন পরিষদের জননন্দিত চেয়ারম্যান পারভীন হাসান প্রীতি পুনরায় তার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ ফিরিয়ে পেলেন।

বিগত দুই টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক সহ একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থীদেরকে বিপুল ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তার স্বামী সাবেক চেয়ারম্যান মোকসেদ হাসান এর আদর্শ বুকে ধারণ করে আদর্শীক রাজনীতি করেন। জনদরদী এই চেয়ারম্যান তার স্বপদ ফিরিয়ে পাওয়ার সংবাদ চৌহাট ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়লে ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় । ইউনিয়নের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে বন্যা বয়ে যায় এবং খুশির সংবাদে তার সমর্থকরা মিষ্টি বিতরণ করেন। ইউনিয়ন পরিষদের সর্বস্তরের মানুষ এসে জনতার চেয়ারম্যানপারভীন হাসান প্রীতি কে ফুলের তোড়া ও ফুলের মালা পড়িয়ে দেয় । সব মিলিয়ে পারভীন হাসান প্রীতি চেয়ারম্যান পদ ফিরিয়ে পাওয়ায় চৌহাট ইউনিয়নের জনগণের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।

চৌহাট ইউনিয়ন পরিষদের সুযোগ্য চেয়ারম্যান পারভীন হাসান প্রীতি জানান, একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে আমার চেয়ারম্যান পদ স্থগিত করেছিল। সত্যের ধ্বংস নাই। এ বিজয় আমার একার নয়, এ বিজয় সত্যের। এ বিজয় আমার প্রান প্রিয় চৌহাট ইউনিয়নের সর্ব স্তরের জনগণের। চৌহাট ইউনিয়নের জনগণ সবসময় আমার পাশে ছিল, আছে এবং আমি বিশ্বাস করি তারা ভবিষ্যতেও থাকবে। সত্যের পথে আছি , সত্যের পথে থাকব আমৃত্যু। আমার পরিবার ও আমি সবসময় আমার ইউনিয়নের জনগণের সুখে দুঃখে পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ। আমি যেন আমার স্বামীর আদর্শে চৌহাট ইউনিয়নে সকল মানুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতা নিয়ে মাদক মুক্ত, স্বনির্ভর ও আদর্শ ইউনিয়ন গড়তে পারি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..