আদালতের নির্দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ৪ জনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন।
মোঃ শামীম আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি:
সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ৪ জনের পরিচয় সনাক্তে ও মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আশুলিয়ার পৃথক স্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আক্তারের নেতৃত্বে পুলিশ ও স্বজনদের উপস্থিতে তাদের লাশ উত্তোলন করা হয়।পুলিশ জানায়, সকালে আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকার পাবনারটেক মহল্লার একটি কবরস্থান থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আশরাফুল ইসলাম নামে একজনের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এরপর আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার চারালপাড়া মহল্লার একটি কবরস্থান থেকে জাহিদুল ইসলাম সাগরের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এছাড়া দুপুরে আশুলিয়ার আমবাগান এলাকার স্থানীয় একটি কবরস্থান থেকে আবুল হোসেন নামে একজনের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আশুলিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আক্তার বলেন, আদালতের নির্দেশে মরদেহগুলো উত্তোলন করা হয়। সকাল থেকে আশুলিয়ার পাবনার টেক, চারালপাড়া ও আমবাগান থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্কা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিক জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আশুলিয়াতে গুলিতে যারা নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের স্বজন থানায় ও আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে ও নিহতের পরিচয় শনাক্তে আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহগুলো কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে।মরদেহগুলো উত্তোলন শেষে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। সরেজমিনে জানাযায়, আশুলিয়ার বগাবাড়ী আমতলা কবরস্থান থেকে আরও দুটি লাশ ডিএনএ টেস্টের জন্য উত্তোলন করা হয়। গত ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ এই দুটি লাশ অজ্ঞাতনামা হিসেবে স্থানীয়রা দাফন করেছিলেন। পরে একটি ভিডিওতে লাশের ছবি দেখে নিহত আবুল হোসেনের স্ত্রী লাকী আক্তার স্বামীকে চিনতে পারেন। তবে একই সঙ্গে দুটি অজ্ঞাতনামা লাশ থাকায় পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন। লাশ উত্তোলনের সময় লাকী আক্তার উপস্থিত ছিলেন। পশ্চিম বাইপাইল এলাকায় ভাড়া থাকতেন তাঁরা। তাঁদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। আরেকটি লাশ এখনো অজ্ঞাতনামা রয়েছে। তাঁর পরিবার-স্বজন পাওয়া যায়নি। লাকী আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী হলুদ জার্সি পরে বের হয়েছিলেন। ২৫ দিন পর একটি ভিডিওতে হলুদ জার্সি দেখে আমি নিশ্চিত হই এটাই আমার স্বামী। পরে খোঁজ পাই তাঁকে কোথায় দাফন করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে অজ্ঞাত আরও একটি লাশ থাকায় আজ লাশ তোলা হচ্ছে। স্বামীর লাশ বুঝে পেতে চাই এবং তাঁর হত্যাকারীদের কঠিন বিচার চাই।