হাসপাতালে রিপ্রেজেন্টেটিভ ও দালালদের দৌরাত্ব কিছুতেই থামছেনা
মোঃ মামুন হাচান স্টাফ রিপোর্টার
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বিড়ম্বনা ও হয়রানির চিত্র প্রতিদিনের। দালাল সিন্ডিকেট ও মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম্যে অসহায় ডাক্তার, রোগী ও তাদের স্বজনরা। দলে দলে বিভক্ত হয়ে প্রায় শত শত দালাল জিম্মি করে রেখেছে খুমেক হাসপাতাল। তাদের দাপটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্বিঘ্নে সেবা দিতে পারছে না। বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা দালাল চক্রকে পৃষ্ঠপোষকতা করে। এ ছাড়া হাসপাতালের কিছু কর্মচারীও দালালদের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
জানা গেছে, দালালচক্রের সদস্যরা হাসপাতাল থেকে প্রতারণা করে রোগী বিভিন্ন ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাগিয়ে আনেন। এ ছাড়া ঔষুধের দোকানেও রোগীর স্বজনদের নিয়ে যান দালালরা। এর বিনিময়ে দালালরা নির্দিষ্ট হারে কমিশন পায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকে ঔষুধের দোকানের প্রতিনিধি।
এ ছাড়া মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম্যে অসহায় রোগীরা। বহির্বিভাগ থেকে শুরু করে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা নির্দেশিকা (প্রেসক্রিপশন) এর ছবি তুলতে মরিয়া।
সাবেক পরিচালক ডাক্তার মুন্সি রেজা সিকান্দার এইসব দালাল এবং ঔষুধ প্রতিনিধিদের নির্ধারিত দিন ব্যতীত হাসপাতালে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছিলেন। তার বদলির পর বিষয়টি আগের মতোই ফিরে এসেছে।
সম্প্রতি দৈনিক আমার সংবাদ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান অসুস্থ অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫-৬ নং মেডিসিন ওয়ার্ডে ২৮ নম্বর বেডে ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশের নিচ থেকে ডাক্তারের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র নিয়ে অপ্সনিন কোম্পানি জনৈক রিপ্রেজেন্টেটিভ নিত্যানন্দ সরদারকে ছবি তোলার চ্যালেন্জ করলে বলে তাদের অনুমতি আছে। কর্তব্য ডাক্তারের কাছে অভিযোগ করলে বলা হয় এদের যন্ত্রনায় আমারা এক প্রকার অতিষ্ঠ, আপনি পরিচালক মহোদয়ের কাছে অভিযোগ করেন। পরিচালক মহদয়ের সাথে কথা বললে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সোনাডাঙা থানায় অভিযোগ করতে বলেন। থানায় অভিযোগ করার পর ওই সব দালাল এবং রিপ্রেজেন্টেটিভ কৌশলে ওয়ার্ড ত্যাগ করে সঠকে পড়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, আমরা সেলস বিভাগে কাজ করি। বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসকদের আমরা নানা উপঢৌকন দেই। আমাদের ওষুধ প্রেসক্রিপশানে লিখলে বিশেষ উপহারের ব্যবস্থা রয়েছে চিকিৎসকদের জন্য। উপঢৌকন নেয়ার পরও চিকিৎসকরা আমাদের ওষুধ প্রেসক্রিপশানে লিখছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমারা রোগীদের চিকিৎসা বই যাচাই করি। এটা চিকিৎসকরাও জানেন। তাই তারাও বাইরের কোন ওষুধ না লিখে আমাদেরই ওষুধ গুলোই রোগীদের খেতে নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার রবিউল ইসলাম বলেন, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের হাসপাতালে প্রবেশের কোনো নিয়ম নেই। তারপরও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের হাসপাতালে সপ্তাহে দু দিন যাওয়ার মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়েছে।