হামলা, মামলা, কারাবাস এবং শারীরিক আঘাতের মধ্যেও শহিদুল ইসলাম টিটু দলীয় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন
এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহিদুল ইসলাম টিটু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে গিয়ে একাধিকবার হামলা ও মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। কারাবাস এবং শারীরিক আঘাতের মধ্যেও তিনি দলীয় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন বলে জানান দলের নেতাকর্মীরা।
টিটুর রাজনৈতিক জীবন শুরু নব্বই দশকে যখন কুতুবপুর ইউনিয়নে মাদক ও সন্ত্রাসের আস্তানা হিসেবে চিহ্নিত ছিল। তখন তিনি মাদক নির্মুল ও সন্ত্রাস বন্দে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। ছাত্রদল থেকে যুবদল এবং পরে মূল দলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে শুরু করে থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, সহ-দফতর সম্পাদক, সভাপতি এবং ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে জেলা যুবদলের ২০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে দলীয় কার্যক্রম সক্রিয় করেন।
২০২২ সালে তাকে ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়। এ বছর জেলা বিএনপির ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পান তিনি। থানা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবেও নেতৃত্ব দেন তিনি।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েই ২৯ জুলাই ‘ঢাকা ঘেরাও’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সময় শিমরাইল এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন। তার বুক, দুই চোখ ও কপালে গুলি লাগে এবং পরে দীর্ঘ চিকিৎসা নিতে হয়।
চিকিৎসকদের মতে, এখনো তার শরীরে কিছু গুলি রয়ে গেছে, যা অপসারণ করা সম্ভব নয়। আহত হওয়ার পরও তিনি সংগঠনের সাথে সক্রিয় রয়েছেন।
৫ আগস্ট পূর্ববর্তী আন্দোলনের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে টিটু বলেন, যখন ফ্যাসিবাদ পতনের এক দফা আন্দোলন চলছিল তখন আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে নেতাকর্মীদের নিয়ে জালকুড়ি, সাইনবোর্ড, পাগলা এলাকা ব্লক করে দিয়েছিলাম। ২২ জুলাই সাইনবোর্ডে আন্দোলনরত অবস্থায় আমার চোখে টিয়ারশেলের আঘাত লাগে। তাই ২৪ জুলাই আমার স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশ আই হসপিটালে যাই চিকিৎসা নিতে। সেখান থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমাকে ধরে রমনা কার্যালয়ে নিয়ে আসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ডিবি কার্যালয়ের নির্যাতনের বর্ণনা করতে গিয়ে চোখের পানি ফেলে দেন টিটু।
তিনি বলেন, আমার চোখ বেঁধে বেঁধে তারা ইলেক্ট্রিক শক থেকে শুরু করে দুপায়ে তালুতে লাঠি পেটা করতো সময় ধরে। একটানা সাত দিন গুম করে রাখা হয়েছিল চোখ বাঁধা অবস্থায়। কখন আজান হচ্ছে বা কয়টা বাজে, কখন রাত আর কখন দিন- কিছুই টের পেতাম না। ইশারায় নামাজ আদায় করতে হতো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, টিটুর মতো তরুণ প্রাণ যতোদিন আছে, ততোদিন আন্দোলন সঠিক পথে এগোবে।
শহিদুল ইসলাম টিটু জানান, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব এবং তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় আমি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে শেষ পর্যন্ত থাকবো।