স্বপদ ফিরিয়ে পেলেন ধামরাইয়ের সূতিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রমিজুর রহমান চৌধুরী রোমা
লিটন আহমেদ চন্দন
ধামরাই ( ঢাকা ) প্রতিনিধি:
বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলন থেকে সূত্রপাত। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র – ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবিতে মাঠে নামে সাধারণ ছাত্র – ছাত্রীরা। পরবর্তী সময়ে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে রূপ নেয় সরকার বিরোধী গন আন্দোলন ও সরকার পতন আন্দোলন।
বিগত সরকার তার দলীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে ছাত্র জনতার উপর মারপিট ও হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠেন এর প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ ও অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সরকার পতনের আন্দোলনে অংশ নেন। ৫ই আগষ্ট দুপুর ২টার দিকে শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা পালিয়ে ভারত চলে যান।
পৃথিবীর কোন দেশের সরকার পতনের পর ৩০০ জন এমপি, মন্ত্রী আত্মগোপনে ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০২১ শে আওয়ামী লীগ সরকার দলীয় প্রতীক নৌকা মনোনয়ন বানিজ্যের মাধ্যমে দিনের ভোট রাতে, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডারদের মাধ্যমে প্রকাশ্যে সিল মেরে প্রায় ৯০% ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার হিসেবে জয়লাভ করেন।
২০২৪ সালের ৫ই আগষ্টের পর মামলা ও জনরোষের ভয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান, প্যানেল চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন আত্মগোপনে চলে যান এতে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে সেজন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার ইউনিয়ন পরিষদের সকল সেবা কার্যক্রম সচল রাখতে ইউনিয়ন পরিষদ ও জনস্বার্থে অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদেরকে অপসারণ করে প্যানেল চেয়ারম্যান ও প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। সারা বাংলাদেশের ন্যায় ঢাকা জেলা ধামরাই উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নে মধ্যে ১৩ টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হয়। ৩টি ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান ও ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয় আর বাকি ৩টি ইউনিয়ন যেমন ( সূয়াপুর, চৌহাট ও ভাড়াড়িয়া )পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিতি থেকে নিয়মিত অফিস করতে থাকেন।
ধামরাই উপজেলার মধ্যে সূতিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৬ টি ইউনিয়নে মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও জনদরদী চেয়ারম্যান মোঃ রমিজুর রহমান চৌধুরী রোমা
২০২৫ সালের ৩ই মার্চ পর্যন্ত নিয়মিত সূতিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । ৪ই মার্চ ২০২৫ খ্রি: তারিখে জারিকৃত এক পত্রাদেশের মধ্যমে ঐ ৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ( সূতিপাড়া, চৌহাট ও ভাড়াড়িয়া) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে ইউনিয়ন পরিষদ ও জনস্বার্থে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন সূতিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রমিজুর রহমান চৌধুরী রোমা।
মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশনের মাধ্যমে ১৬ই এপ্রিল ২০২৫ ইং দীর্ঘ ১ মাস ১২ দিন পর ০৫,৪১,২৬০০,০১৭৫৭,০০১,২০২৪-৩০২(৭) নং স্মারকে ঢাকা জেলা প্রশাসকের সাক্ষরকৃত অফিস আদেশে সূতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণের আদেশ স্থগিত করা হয়। এই স্থগিতাদেশের মাধ্যমে সূতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের জননন্দিত চেয়ারম্যান মোঃ রমিজুর রহমান চৌধুরী রোমা তার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ ফিরিয়ে পেলেন।
বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাজা কে বিপুল ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। মোঃ রমিজুর রহমান চৌধুরী রোমা ধামরাই উপজেলার যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানেও তিনি সফল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। জনদরদী এই চেয়ারম্যান তার স্বপদ ফিরিয়ে পাওয়ার সংবাদ সূতিপাড়া ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়লে ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় । ইউনিয়নের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে বন্যা বয়ে যায় এবং খুশির সংবাদে তার সমর্থকরা মিষ্টি বিতরণ করেন। সূতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সর্বস্তরের মানুষ ইউনিয়ন পরিষদের এসে জনতার চেয়ারম্যান মোঃ রমিজুর রহমান রোমা কে ফুলের তোড়া ও ফুলের মালা পড়িয়ে দেয় এবং তার অসংখ্য কর্মীরা ব্যান্ড পার্টি নিয়ে । সব মিলিয়ে মোঃ রমিজুর রহমান রোমার চেয়ারম্যান পদ ফিরিয়ে পাওয়ায় সূতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চত্ত্বরে আনন্দের বন্যা বইছে।
সূতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রমিজুর রহমান চৌধুরী রোমা জানান, একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে আমার চেয়ারম্যান পদ স্থগিত করেছিল। রাখে আল্লাহ মারে কে? সত্যের ধ্বংস নাই। এ বিজয় আমার একার নয়, এ বিজয় সত্যের। এ বিজয় আমার প্রান প্রিয় সূতিপাড়া ইউনিয়নের সর্ব স্তরের জনগণের। সূতিপাড়া ইউনিয়নের জনগণ সবসময় আমার পাশে ছিল, আছে এবং আমি বিশ্বাস করি তারা ভবিষ্যতেও থাকবে। সত্যের পথে আছি , সত্যের পথে থাকব আমৃত্যু। আমি সবসময় আমার ইউনিয়নের জনগণের সুখে দুঃখে পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ।আল্লাহ সহায় থাকলে কোন অপশক্তি আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। সূতিপাড়া ইউনিয়নে সকল মানুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতা নিয়ে চাঁদাবাজ মুক্ত, মাদক মুক্ত, আদর্শ ও আধুনিক মডেল ইউনিয়ন গড়তে চাই।