সুন্দরবনের প্রবেশ করতে জেলে বাওয়ালিদের পাশের রাজস্ব বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপকূলীয় এলাকার জেলে বাওয়ালিরা।
রাকিবুল হাসান ঃসুন্দরবনে চলতি মৌসুমে সরকারি রাজস্ব আগের তুলনায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। সেই সুযোগে বন বিভাগ ঘুষের পরিমাণও দ্বিগুণ করেছে, ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলে বাওয়ালীরা। সরকারি রাজস্ব ও ঘুষ দ্বিগুণ হওয়ায় সুন্দরবনে প্রবেশে অনীহা প্রকাশ করছে জেলে বাওয়ালীরা। যার কারণে পাশ পারমিট কমে যাওয়ায় সরকারি রাজস্ব সংকটের আশংকা রয়েছে। বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে সুন্দরবনে মাছ কাঁকড়া গোলপাতা ও ভ্রমণে সরকারি রাজস্ব^ দ্বিগণ করা হয়েছে। এই সুযোগে বন বিভাগও জেলেদের ঘাড়ে বোঝা চাপিয়ে দিয়ে দ্বিগুণ হারে ঘুষ আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়, ২০ ফেব্রুয়ারির আগে ১ কুইন্টাল সাদা মাছের রাজস্ব ছিল ৩২০ টাকা, ১ কুন্টাল কাঁকড়ার রাজস্ব ছিল ৩৭৫ টাকা ও ১ কুইন্টাল গোলপাতার রাজস্ব ছিল ২৫ টাকা। সব মিলিয়ে বন বিভাগের স্টেশনগুলো ১ সপ্তাহে ২ জনের কাঁকড়ার পাশ সমার্পন করতে নিত ৩৫০ টাকা এখন তা জেলেদের ঘাড়ে চাঁপিয়ে দিচ্ছে ৮০০ টাকা। সাদা মাছের পাশ প্রতি সপ্তাহে সমার্পন করতে নিত ৪০০ টাকা এখন তা জেলেদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে ৮০০ টাকা। গোলপাতা আহরনে প্রতি কুন্টালের মূল্য ছিল ২৫ টাকা এখন হয়েছে ৫০ টাকা। কিন্তু বন বিভাগ নিত ১০০মণ গোলপাতা ১৫০০ টাকা এখন তা বাড়িয়ে নিচ্ছে ১০০ মণ ৩০০০ টাকা। মড়ার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়ে জেলে ও বাওয়ালীদের বন বিভাগের সরকারি রাজস্ব ও ঘুষের চাপে জেলেরা সুন্দরবনে প্রবেশ করতে না পেরে জনপ্রতিনিধিসহ নানান জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। কেউই সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। সুন্দরবনে প্রবেশ করতে অনীহা প্রকাশ করেছে জেলেরা সে কারণে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হতে পারে। এর জন্য দায়ি সুন্দরবনের অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় দালালরা।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি বা কোন সংসস্থার সাথে বসাবসি ছাড়াই দালালদের সাথে বনবিভাগ রেট নির্ধারণ করেছে। ২ জনের কাঁকড়ার পাশ ১ সপ্তাহের জন্য সমর্পন করতে ৬০০ টাকা, সাদা মাছ ৮০০ টাকা, গোলপাতা ৩০০০ টাকা। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আব্দুল মজিদ, মান্নান, ছাত্তার, রশিদ ও গাবুরা ইউনিয়নের রাশেদুল, মাজেদ জানান তাদের পক্ষে ১ সপ্তাহে এত টাকা কোন কায়দায় বনবিভাগের অসাধু কর্মকার্তাদের দেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণে তারা সুন্দরবনে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক কেএম হাসান জানান, অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানার বাইরে। আপনারা স্টেশন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাল মিলিয়ে নিন।