বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন

লেখাপড়া তাহলে শেষ হয়ে যাবে অর্জুনের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৩
  • ৬৯ বার পঠিত

লেখাপড়া তাহলে শেষ হয়ে যাবে অর্জুনের

 

দিনাজপুর থেকে আমাদের প্রতিনিধি এস এম মাসুদ রানার ডেক্স রিপোর্ট

বয়স যখন নয় বছর, তখন থেকেই কোমল হাতে ধরতে হয়েছিল পরিবারের হাল। অথচ যে বয়সে পড়াশোনা করার কথা, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা কিংবা দুষ্টুমিতে সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখার কথা, সেই বয়সেই অর্জুন (১৭) ও ছোট ভাই অজিৎ (১৪) কাজ করছে কর্মকার শিল্পে। ভাগ্যবঞ্চিত এমন অনেক শিশু পরিবারের একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠে। এতে তাদের জীবন নেমে আসে অন্ধকার।

সুবিধাবঞ্চিত শিশু অর্জুন ও অজিৎ এর বাবা তাদের জন্মের আগে থেকে ঢাকা শহরে রিক্সা চালায়,রিক্সা চালিয়ে কোনো রকম চলে সংসার মা গৃহিনী । লেখাপড়া আর সংসারের খরচ বোঝা হয়ে দুই ভাই এর মাথায় চেপেছে। তাই এই বয়সে কর্মকার শিল্পে কাজ করে সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হয়েছে দু’ভাই।

দু’ভাই দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের র্দূগাপুর গ্রামের দুলাল কর্মকার এর ছেলে। তাদের বাড়ির জায়গায় ছাড়া কোনো জমিজমা নেই। দুই ভাই কেবল কর্মকার শিল্পে কাজ করে না, লেখাপড়াও করে। ছোট ভাই অজিৎ র্দূগাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে আষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। অর্জুন র্দূগাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন । গত ২৮ জুলাই প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ৩.৩৯ পেয়ে উর্ত্তীণ হয়েছে। পরীক্ষায় পাস করেও দুশ্চিন্তায় আছে একাদ্বশ শ্রেনীতে ভর্তি নিয়ে।

 

সে কাঁদো কাঁদো চোখে আরও জানায়, আমি বড়, আমার ভাই ছোট। স্কুলে পড়তেও ভালো লাগে, কাজ করতেও ভালো লাগে। আমি কাজ শিখিয়ে বছর দু’এক আগে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে র্দূগাপুর মো.দেলোয়ার ইসলামের দুটি টিনসীডের দোকান ১৫শ টাকায় ভাড়া নিয়ে এখানে কর্মকার শিল্পের জিনিসপত্র বানিয়ে বিরামপুরসহ বিভিন্ন হাটে বিক্রি করি।

সে আরও বলে, যদি কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতাম বা কোন বিত্তবান আমাকে সহযোগিতা করতো, তাহলে পড়াশুনাটা চালিয়ে যেতে পারতাম।

অর্জুন এর বাবা দুলাল কর্মকার জানান, আমি ঢাকা শহরে রিকশা চালাই। ৭-৮ বছর আগে আমি অসুস্থ হয়। আর তখন থেকেই ঠিকমতো রিকশা চালাতে পারি না। কষ্ট হয়। তিনি আরও জানান, শারীরিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না হওয়ায় নিয়মিত রিকশা চালাতে পারি না।

 

দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র সাহা বলেন, তারা পেশায় কর্মকার পরিবার, তারা আমাদের স্কুলের ছাত্র। পরিবারে অভাব-অনটন কস্টের কারণে বাবার পেশার হাত ধরতে হয়েছে। যার ফলে স্কুলেও উপস্থিত ছিল কম। তাদের অর্থিক সংকটের কারণে স্কুল থেকে পরীক্ষার ফরমসহ অন্যান্য সহযোগিতা করা হয়েছে। তারা লেখাপড়ায় খুবই ভালো ছিল । তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শুভকামনা রইল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..