স্থানীয় প্রশাসনের ঘোষণাকৃত তৃতীয় ধাপের ‘কঠোর লকডাউন’ চলমান। এরমধ্যে আগামী পহেলা জুলাই থেকে সারাদেশে কড়াকড়ি ‘লকডাউন’-এর ঘোষণা। যেটি অন্যান্য সময়ের চেয়ে কঠোরভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
করোনার সংক্রমণ রোধে যখন কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়নের কথা বলা হচ্ছে তখন স্বাস্থ্যবিধিতে নেই তেমন গুরুত্ব। আশেপাশে পুলিশের উপস্থিতি থাকলে মাস্ক ব্যবহার করছে মানুষ। অন্যসময়ে তেমন কোনো গুরুত্বই দেখা যাচ্ছে না। নগরী জুড়ে জমছে আড্ডাও।
এমনকি নগরীতে দায়িত্বরত অনেক পুলিশ সদস্যকেও দুপুরের কড়া রোদের মধ্যে ডিউটি করার সময় নাকের নিচে মাস্ক নামিয়ে রাখতে দেখা যাচ্ছে। আর সন্ধ্যার পর নগরজুড়ে থমথমে নিরবতা বিরাজ করছে।আগামী পহেলা জুলাই থেকে সারাদেশে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেলা গড়ানোর আগে পর্যন্ত নগরীর বাজারসহ রাস্তায় জনসমাগম থাকছে। বিশেষ করে নগরীর সাহেববাজার, মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজার ও মুদিদোকানগুলোতে ভিড় বেশি থাকছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি খুব কমই গুরুত্ব পাচ্ছে। অনেকে মাস্কও পরছেন না। সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন রোদ প্রচুর। তার উপর বাজারে মানুষের ভিড়। এই গরমের মধ্যে সব সময় মাস্ক পরে থাকা যায় না। তাই কখনো মাস্কা পরেন, কখনো খুলে রাখেন। তবে তাদের কাছে মাস্ক আছে। আর সামাজিক দূরত্ব বাজারে নিশ্চিত করা কষ্টকর একটি বিষয়। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি থাকলে হয়তো এটা নিশ্চিত হতো। আর সাহেববাজার কাঁচাবাজারের যে অবকাঠামো তাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা দুরূহ ব্যাপার।
ক্রেতারা একরকম বিরক্তি প্রকাশ করে জানায়, এই গরমের মধ্যে মাস্ক পরে থাকা সম্ভব না। আর সবাই সব সময় মাস্ক পরেও থাকে না। তাদের কাছে মাস্ক আছে। তারা মাস্ক পরেন। তবে অস্বস্তি হলে খুলে রাখেন। নগরীতে করোনার অন্যতম হটস্পট লক্ষ্মীপুর এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে বা মানাতে তেমন গুরুত্ব দেখা যায় না।
বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের অসচেতন যাতায়াতও থাকছে। ফার্মেসিগুলোতেও মাস্ক কিংবা স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে তেমন সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত না করে চায়ের আড্ডা আর খোশগল্পতে মাতছেন এসব ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা।
এদিকে দিনের বেলা নগরীর বিভিন্ন মোড় ও ভেতরের রাস্তাগুলোতে আড্ডা জমতে দেখা যাচ্ছে। হোটেলের সার্টার টেনে বাইরে থেকে ক্রেতা খুঁজে ভেতরে খাবার পরিবেশনও করছেন অনেকেই। তবে বিকেলের পর বাইরে মানুষের অপ্রয়োজনীয় ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে পুলিশের টহল দলের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।
হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে বাইরে বের না হতে নির্দেশনা দিচ্ছে। প্রশাসনের নির্দেশনানুযায়ী শপিংমল ও মার্কেট বন্ধ থাকার কথা থাকলেও এদিন কোর্টবাজার ও সাহেববাজার এলাকার অনেক দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে। অর্ধ সার্টার টেনে তারা ব্যবসা করছেন। এদিন দুপুর পর্যন্ত দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনাও ভালো ছিলো।
নগরীর কয়েকটি মোড়ে পুলিশের তৎপরতা দেখা গেছে। সেখানে তারা যাতায়াতকারী পরিবহণগুলোকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে এসেছেন এটা প্রমাণে ব্যর্থ হলেই তাদেরকে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার কখনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে গাড়ির বাতাস ছেড়ে দেয়াসহ মামলাও দেয়া হচ্ছে। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ টিমের অভিযানও চলমান রয়েছে।