তরিকুল ইসলাম তারেক রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি ঃ
টানা লকডাউনে এবার মাথায় হাত পড়েছিলো আমচাষিদের। তবে শেষদিকে এসে আমের দাম বাড়তে শুরু করায় চাষি ও ব্যবসায়ীদের মুখেও হাসি ফুটতে শুরু করেছে। যদিও এখন ফজলি ছাড়া তেমন আর আম নাই বাগানে। জাতের আম বলতে এখন ফজলিই ভরসা রাজশাহীর চাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছে। তবে এই ফজলিই গত এক সপ্তাহের মধ্যে দাম বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। গতকাল রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারে ফজলি আম প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৯০০-১০০০ টাকা মণ দরে। আগের দিনের চেয়ে মণে ১০০ টাকা বেড়েছে।
চাষিরা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছর শুরু থেকেই প্রতিটি জাতের আমের দাম এক দুইদিন পর পরই মণে অন্তত ১০০ টাকা বাড়ত। কিন্তু এবার আমের সব রেকর্ড ভেঙে যেমন নিম্ন দামে বিক্রি হয়েছে। তেমনি কোনো কোনো জাতের আমের শেষ দিকে গিয়েও দাম না বেড়ে উল্টো কমে গেছে। এই অবস্থায় রাজশাহীর বাগান থেকে শেষে হয়েছে ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপাল ভোগ জাতের আম। খুবই অল্প পরিমাণে এখনো পাওয়া যাচ্ছে আম্রপালি ও লখনা জাতের। আম্রপালি গতকাল রাজশাহীর বাজারে বিক্রি হয়েছে দুই হাজার পাঁচশ টাকা পর্যন্ত। যদিও গত বছর আম্রপালি এই সময়ে বিক্রি হয়েছে চার হাজার পাঁচশ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা মণ দরে। কিন্তু এ বছর এখনো তিন হাজার টাকা মণ ছূঁতে পারেনি আম্রপালি। তার আগেই শেষ হয়ে যাবে রাজশাহীতে এ জাতের আম।
এ বাজারের আরেক আম বিক্রেতা লোকমান আলী বলেন, ‘সবার বাগানে ফজলি আমও থাকে না। যারা কিছু আম রাখতে পেরেছিলেন, সেগুলো বৃষ্টির কারণে ফেটে যাচ্ছে। ফলে এখন না চাইলেই আম নামাতে বাধ্য হচ্ছি। এখন আমের দাম বাড়ছে। কারণ রাজশাহীতে আম একেবারে শেষের দিকে। আমার বাগানে অল্প কিছু ফজলি ছাড়া আর কোনো আম নাই। বেশিরভাগ চাষির বাগানেই একই অবস্থা।’
বাগানের আম ব্যবসায়ী নবিরুল ইসলাম বলেন, ‘এখন ফজলিই পাওয়া যাচ্ছে অল্প পরিমাণে। এর বাইরে একেবারেই অল্প পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে লখনা ও আম্রপালি জাতের আম। আজ (গতকাল সোমবার) ফজলি বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকা দরে। এছাড়াও আম্রপালি ২৫০০-৩০০০ এবং লখনা বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৬ শ টাকা মণ দরে।’
প্রসঙ্গত,রাজশাহীতেএবার হেক্টর প্রতি গড়ে ১৫ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন হারে আম উৎপাদন হয়। কিন্তু এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তার চেয়েও বেশি আম উৎপাদন হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এবার জেলায় ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। সেই হিসেবে ধরা হচ্ছে এবার রাজশাহীতেই অন্তত দুই লাখ ৪৩ হাজার ৪৮৩ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন হয়েছে। তবে শুরু থেকেই এবার দাম না থাকায় বেশি ফলণ হলেও চাষি ও ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়েছিলেন।