রহনপুরে গ্রাম বাংলার পিঠা পুলি উৎসব
মোঃ তুহিন
(চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র রহনপুরে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পৌষ মাসে পিঠা-পুলির উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার দিনব্যাপী রহনপুর পৌর এলাকার বাবুরঘোন মহল্লায় এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছরের ন্যায় গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীর ছেলে মেয়েরা মনে আনন্দ দেয়ার জন্য এ নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন। আর গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য উত্তর রহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মমতাজ বেগমের এই আয়োজন। এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রিয় শিক্ষিকাকে এ নবান্ন উৎসবে অংশ নেয়ার জন্য প্রতিবছর তারা তিন কেজি করে সংগ্রহ করা মাঠের ধান দিয়ে থাকেন। প্রায় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী উৎসাহী হয়ে এ পিঠা উৎসবে অংশ নিয়েছেন। ফলে মহল্লাটিতে নবান্ন উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। লাল-হলুদ শাড়ি, কাঁচা ফুলের মালা পরে ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল বয়সের নারী-পুরুষ সারাদিন পিঠা তৈরি ও নাচে-গানে মেতে উঠেন। গ্রামবাংলার ঢেঁকি ও যাঁতার শব্দে ওই দিনটি একটি অন্যরকম মাত্রা যোগ করে। ছেলে-মেয়েদের সংগ্রহ করা ধান থেকে ঢেঁকি ছাঁটা চাল যাঁতায় পিসে তৈরি করা আটা দিয়ে হরেক রকমের পিঠা-পুলি খেতে আসে উৎসুক জনসাধারণ। আবার প্যাকেট করে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বাসায় পৌঁছে দেয়া হয় এ পিঠা। পিঠা খেতে আসা উৎসুক অতিথিদের গ্রামবাংলার সংগীত গেয়ে আনন্দ দেয় ওই ছাত্র-ছাত্রীরা। গ্রামের এ ঐতিহ্যকে উৎসাহ যোগাতে ছুটে এসেছিল শিক্ষক ও স্থানীয় সাংবাদিকরা। এ ব্যাপারে শিক্ষিকা মমতাজ বেগম জানান, তার নানা-নানীরা বহুযুগ ধরে বিভিন্ন ধরনের পিঠা-পুলি বানিয়ে গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীদের দাওয়াত করে খাওয়াতেন। সেই থেকেই এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতিবছর গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এ উৎসবটি পালন করে আসছেন। তাকে এ কাজে সহযোগিতা ও উৎসাহ যোগিয়ে আসছে বড়বোন কলেজ শিক্ষিকা শামিমা আখতার ও এলাকার কৃষাণীরা। পিঠা উৎসবে উপস্থিত ছিল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রবীন সাংবাদিক দৈনিক সংবাদ এর প্রতিনিধি সামসুল ইসলাম টুকু, উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আহমদ সিনিয়ার শিক্ষক (ইংরেজি)
হরিমহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কবি মাহবুবুল আলম জন, সহকারি শিক্ষক ( বাংলা) কবি আজমাল হোসেন মামুন, কবি মোফাজ্জল হোসেন বিশ্বাস, সাবেক কাউন্সিলর জাহানারা পারভিন, সমাজ সেবক নেস মোহাম্মদ মন্টু,
সাদিকুল ইসলাম সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। পরে স্থানীয় শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।