এর আগে, এ ঘটনা তদন্তে গত বৃহস্পতিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কারা অধিদফতর। ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজনস) তৌহিদুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে জড়িত সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার বোস বলেন, বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর আমাদের নজরে আসে। ওই সময়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত কারারক্ষীদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য ১৭ জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিএসএমএমইউ প্রিজন সেলে দায়িত্ব পালন করা চার জন প্রধান কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তারা হলেন, ইউনুস আলী মোল্লা, বদিউজ্জামান, আব্দুস সালাম ও আনোয়ার হোসেন।
বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে সাতজন সহকারী কারারক্ষী ও ছয়জন সাধারণ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে।
তারা হলেন জসীম উদ্দিন, সাইদুল হক খান, বিল্লাল হোসেন, ইব্রাহিম খলিল, বরকত উল্লাহ, এনামুল হক ও সরোয়ার হোসেন। সাধারণ কারারক্ষীরা হলেন, মোজাম্মেল হক, জাহিদুল ইসলাম, আমির হোসেন, কামরুল ইসলাম, শাকিল মিয়া ও আব্দুল আলীম। যদি আরো কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের অক্টোবরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে চারবার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও ৯৬ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি রফিকুল আমীন এখন কারা তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আছেন। সেখান থেকেই তিনি ভার্চুয়াল বৈঠক করে ‘নতুন এমএলএম ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা’করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জুম মিটিংয়ে রফিকুল আমীন বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক দিক নির্দেশনা দেন এবং দেশের বাইরে থেকে টাকা আনার বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া সেই মিটিংয়ের নতুন এমএলএম ব্যবসার জন্য শিগগির এক হাজার ৩০০ মার্কেটিং এজেন্ট নিয়োগের কথা বলছেন তিনি। মিটিংয়ের ভিডিওতে তাকে ‘মিস্টার এ’ নামে দেখা গেছে, প্রোফাইল ছবিতে লেখা ছিল ইংরেজি হরফ ‘আর’। এতে ডেসটিনির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও যুক্ত ছিলেন। এমন অভিযোগ ওঠার পর আট কারারক্ষীকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।