রংপুর বিভাগের আট জেলার মানুষের চিকিৎসার অন্যতম ভরসাস্থল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। দূর-দূরান্ত থেকে এখানে আসেন রোগীরা। রোগীর চাপকে কেন্দ্র করে রমেক হাসপাতালে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। রোগী ও স্বজনদের জিম্মি করে ভর্তি ও চিকিৎসা দিতে বাড়তি টাকা নিচ্ছে এ সিন্ডিকেট।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ সিন্ডিকেটের অধিকাংশ সদস্য বহিরাগত, এরা হাসপাতালের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত না। আরো জানা গেছে, শুধুমাত্র রোগী ভর্তি থেকে ২৪ ঘণ্টায় এ সিন্ডিকেটের আয় তিন লাখ টাকার বেশি।
ভুক্তভোগী রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, রমেক হাসপাতালের এ সিন্ডিকেটের সামনে কারো কথা বলার সাহস নেই। কেউ প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। শুধু রোগীরাই নন, চিকিৎসক-নার্সরাও সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাতে জিম্মি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে নিতে ট্রলি বয়দের দিতে হয় ২০০ টাকা। রোগী ভর্তিতে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে বাড়তি দিতে হয় ৫০ টাকা, এটা নেন সিন্ডিকেটের প্রধান। এছাড়া বহির্বিভাগে টিকেট বাণিজ্য, বাইরে থেকে রোগী নিয়ে আসার মাধ্যমেও বাড়তি আয় করে এ সিন্ডিকেট। এভাবে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় রমেক হাসপাতালের এ সিন্ডিকেটের আয় হয় তিন লাখ টাকার বেশি। এ টাকা ভাগাভাগি হয় উপর থেকে নিচ পর্যন্ত।
রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম বলেন, আমি কিছু কিছু ঘটনা শুনেছি। সার্বিক বিষয় গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাকে ভর্তি করতে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই ছেলে। ভর্তির জন্য বাড়তি টাকা না দেয়ায় দুই ভাইয়ের হাত ভেঙে দিয়েছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এ ঘটনা জানাজানির পরই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ঘটনাটি তদন্তের জন্য চার সদস্যের তদন্ত কমটি গঠন করেছে রমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ফারুক আহমেদ বলেন, রমেক হাসপাতালে দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নেব।