শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৪ পূর্বাহ্ন

রংপুরে গ্রাম্য সালিশে অর্ধ লক্ষ টাকায় ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ধর্ষক গ্রেফতার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১
  • ২০০ বার পঠিত

 

গ্রাম্য সালিশে অর্ধলক্ষ টাকায় ধর্ষনের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা: ধর্ষক গ্রেফতার

সালাউদ্দিন সুমন রংপুর জেলা প্রতিনিধি:

রংপুরের পীরগঞ্জের মদনখালি ইউনিয়নের হাসাপাড়ায় গ্রাম্য সালিশে এক গৃহবধুর ইজ্জতের মূল্য ৪৯ হাজার টাকা নির্ধারণে ধর্ষনের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করে দালালচক্র। দালাল চক্রের হাতে অসহায় পরিবারটি জিম্মি হয়ে পড়ে।

বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারের নির্দেশে সহকারী পুলিশ সুপার (ডি সার্কেল) কামরুজ্জামান গত রোববার রাতে তদন্তে আসেন। পরে পুলিশি পাহাড়ায় ওই গৃহবধুকে থানায় নিয়ে আসা হয়। গৃহবধুর মা সাহেরন নেছা বাদী হয়ে নারী শিশু ও নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করে। এ ঘটনায় ধর্ষক মাহাবুব মিয়াকে পুলিশ রাতেই গ্রেফতার করে।

উল্লেখ্য উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের হাসারপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যান চালক আশরাফুল ইসলামের কন্যা’র প্রায় দেড় বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী বড়আলমপুর গ্রামের বাচ্চা মিয়ার ছেলে সুজন মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। বছর না পেরুতেই পারিবারিক কলহের জেরে ওই গৃহবধু বাবার বাড়িতে ফিরে আসে এবং স্থানীয় একটি চুলের (ক্যাপ) কারখানায় কাজ নেয়। গৃহবধু তার কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে একই গ্রামের (হাসারপাড়া) প্রভাবশালী আবুল কাশেম মিয়ার ছেলে ১ সন্তানের জনক মাহাবুব মিয়ার। মাহাবুব সুকৌশলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই গৃহবুধুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রায় ৭মাস ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার নিজ বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে লালসা মেটায়। সম্প্রতি ওই গৃহবধু মাহবুবকে বিয়ের করার চাপ দিলে মাহবুব নানা টালবাহনা করতে থাকে। এক পর্যায়ে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গত ২৩ জুলাই দুপুরে ওই গৃহবধুসহ মা সাহেরন নেছা পীরগঞ্জ থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ করে। খবর পেয়ে দালালচক্র মেয়ে পিতা আশরাফুলকে হুমকি-ধামকি দিয়ে মিমাংসার প্রস্তাব দেয়। ভয়ে থানায় উপস্থিত মা ও মেয়ে কৌশলে থানা থেকে সটকে পড়ে। দিনগত গভীর রাতে স্থানীয় তাজমল হোসেনের বাড়িতে মাতব্বর আব্দুর রহিম, মনোয়ার ও আফজাল হোসেন নির্যাতিত পরিবারের সঙ্গে মিমাংসা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ওই গৃহবধুর ইজ্জতের মূল্য ৫০হাজার টাকা নির্ধারণ করে অভিযুক্ত মাহাবুবকে মামলায় না জড়ানোর শর্তে কন্যার পিতার নিকট থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণ করে। এবং নির্যাতিত পরিবারের হাতে ২৫ হাজার টাকা হাতে তুলে দেয়া হয়।

ঘটনাটি জানাজানি হলে রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমারের নির্দেশে ডি-সার্কেল কামরুজ্জামান তদন্তে আসেন। এ প্রসঙ্গে ডি সার্কেল কামরুজ্জামান বলেন মামলা রুজুর পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি সালিশি বৈঠকে কারা কারা সর্ম্পৃক্ত ছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..