যাওয়ার আগে সব সামরিক বিমান ধ্বংস করে গেল মার্কিন বাহিনী
জসীম উদ্দিন ইতি
সোমবার আফগানিস্তানে চূড়ান্তভাবে শেষ হয় মার্কিন অধ্যায়। ৩১ আগস্ট
পর্যন্ত সময়সীমা থাকলেও স্থানীয় সময় ৩০ আগস্ট (সোমবার) বিকাল সাড়ে ৩টায়
সব শেষ মার্কিন বিমান ছেড়ে যায় কাবুল বিমানবন্দর।
এরমধ্য দিয়ে শেষ হয় দেশটিতে আমেরিকার দীর্ঘ ২০ বছরের সামরিক অভিযান।
এদিকে, তালেবানের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে তাড়াহুড়া করে কাবুল ত্যাগের
কারণে সব সামরিক বিমান নিজ দেশে ফেরত নিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। কাবুলের
হামিদ কারজাই বিমানবন্দর ত্যাগের আগে সেখানে থাকা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির
৭৩টি সামবিক বিমান মার্কিন বাহিনী এমনভাবে নষ্ট করে রেখেছে, যাতে
তালেবানরা আর এগুলো ব্যবহার করতে না পারে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানান, কাবুল
বিমানবন্দরের নিরাপত্তার জন্য যেসব সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আকাশ
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা ছিল, সামরিক বিমানগুলোর মতো সেগুলোও
নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।
কেনেথ ম্যাকেঞ্জি আরও বলেন, ফেলে রেখে আসা মার্কিন সামরিক বিমানগুলো আর
কখনও আকাশে উড়বে না। এছাড়া ৭০টি সামরিক যান এবং ২৭টি হামরি টহল যান নষ্ট
করা হয়েছে, যার প্রতিটির মূল্য এক মিলিয়ন ডলার।
২০০১ সালে তালেবান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে এ পর্যন্ত নিজেদের
উপস্থিতি অব্যাহত রাখে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। এ মিশন শেষ হওয়ার কথা ছিল
৩১ আগস্ট। কিন্তু সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে ৩০ আগস্ট মার্কিন সামরিক বাহিনীর
সর্বশেষ ফ্লাইটটি আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। এর
মাধ্যমে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো যুদ্ধের চূড়ান্ত সমাপ্তি ঘটল।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, তারা ছয়
হাজার মার্কিন নাগরিকসহ ৭৯ হাজার মানুষকে কাবুল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে
গেছেন। ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখল করার পর অল্প সময়ের মধ্যে সব মিলিয়ে
কাবুল থেকে এক লাখ ২৩ হাজার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন দেশ নিয়ে গেছে।
এক ব্রিফিংয়ে কেনেথ ম্যাকেঞ্জি সাংবাদিকদের বলেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা
প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে ঘোষণা করতে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি।
তিনি বলেন, আজ রাতের এ প্রত্যাহার শুধু সেনা প্রত্যাহারই নয়, বরং এটি
প্রায় ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধেরও সমাপ্তি, যে যুদ্ধ আফগানিস্তানে ২০০১
সালের ১ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল।
গত এপ্রিলেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে ৩১ আগস্টের
মধ্যে সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণা
অনুযায়ী সৈন্য প্রত্যাহার শেষ করলেন মার্কিনিরা। সূত্র: গাল্ফ নিউজ