মেলান্দহ মোবাইলের টর্চ লাইটের আলোয় ভরসা মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
বাকিরুল ইসলাম (জামালপুর)প্রতিনিধি
জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। ৩ লাখ ২০ হাজার জনগনের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে নেই জেনারেটর বা আইপিএসের সুব্যবস্থা। ফলস্বরূপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিনের বেলায় রাতের অন্ধকার। মোবাইলের টর্চ লাইটের আলোয় যেন ভরসা। এতে রোগীদের দুর্ভোগ চরমে।
(২১ আগষ্ট)সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের ভিতরে প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীর প্রচুর ভীর, তবে বিদ্যুৎ নেই। প্রচন্ড গরমে দাড়িয়ে টিকেট কাটছেন রোগীরা। রোগীর শরীলে ঘাম বেয়ে মাটিতে টুপ টুপ করে বৃষ্টির মত পড়ছে। একজনের চেহারা আরেক জনের দেখার উপায় নেই। জরুরী বিভাগে মোবাইলের একটু আলোতে রোগী দেখছেন। তাকে জিঞ্জেস করলাম অন্ধকারে বসে আছেন কি করে? তিনি জানালেন হাসপাতালে জেনারেটর বা আইপিএসের কোন ব্যবস্থা নাই। লোডশেডিং হলেই রোগীদের পাশাপাশি আমাদেরও এ রকম কষ্ট করতে হয়। দেখেন ঘেমে একাকার হয়ে গেছি। পাশেই ডাক্তারদের রুমেও একই অবস্থা। মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে দেখছেন রোগী। হাসপাতালের পুরুষ, নারী ওয়ার্ডের অবস্থা আরও খারাপ। দেশে চলছে লোডশেডিংয়ের শিডিউল। একঘন্টা লোডশেডিং এর কথা থাকলেও লোডশেডিং হচ্ছে ৮/৯ ঘন্টা। রোগীদের ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ চলে গেলে নেই কোন জেনারেটর, আইপিএস এর ব্যবস্থা। এতে ভর্তি হওয়া রোগীদের চরম কষ্টে পার করতে হচ্ছে সময়। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ভ্যাপসা গরমে আরও বেশী অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ডেলিভারী ওয়ার্ডে আইপিএস থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া একাধিক রোগী বলেন, সারা দিনের ভিতর ১০/১২ বার কারেন্ট চলেযায়। আমাদের এই গরমে অনেক সমস্যা হয়। দিনের বেলা কষ্ট করে থাকলেও রাতে বেশী সমস্যা হয়। হাসপাতালে কোন জেনারেটর নেই। রাতে কারেন্ট চলে গেলে পুরোই অন্ধকার হয়ে যায়। রোগের চিকিৎসা নিতে এসে আরও বেশী অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি আমরা।
পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া নুর-ইসলাম খুসি বেগমগ বলেন, আমি হাই প্রেসার নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। কিন্তু হাসপাতালে বেশীর ভাগ সময় কারেন্ট থাকেনা। এখানে বিকল্প কোন ব্যবস্থা নাই। গরমে আমার প্রেসার আরও বেড়ে যাচ্ছে। বার বার আমার ছেলে মেয়ে মাথায় পানি দিচ্ছে। হাসপাতালে এসে আরও বেশী অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের আত্মীয়-স্বজনরা ক্ষুভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপালের মত এমন একটি জায়গায় সারাদিন সারারাত কারেন্ট থাকেনা। কারেন্ট চলে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা আসেনা। রোগীদের জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। দিনের বেলা পাখা দিয়ে বাতাস দিয়ে কোন রকম চলা যায়। রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় পুরো হাসপাতাল অন্ধকার হয়ে যায়। মশার কামর, রোগী নিয়ে বাথরুমে যাওয়া অনেক সমস্যা হয়। গরমে রোগী আরও বেশী অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
হাসপাতালে কর্মরত একাধিক নার্স বলেন, হাসপাতালে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকা দরকার। বিদ্যুৎ না থাকার কারনে রোগীদের অনেক সমস্যা হয়। আমাদের নার্স রুমে কোন জেনারেটর বা আইপিএস এর ব্যবস্থা নেই। রোগীদের পাশাপাশি আমাদের ডিউটি করা অনেক সমস্যা হয়। রাতে ডিউটি করতে বেশী কষ্ট। মোবাইলের লাইটের উপর ভরসা ছাড়া বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ গাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে একটি জেনারেটর ছিল তাও অনেক দিন যাবৎ নষ্ট, এখন দুইটি আইপিএস আছে একটি আমার অফিসে, আরেকটি লেবার ওয়ার্ডে আছে। লাইটগুলো চলে বেশী সময় ফ্যান চালানো যায়না। তিনি আরও জানান, বিদ্যূৎ অফিস লোডশেডিংয়ের জন্য শিডিউল দিয়েছে তাও মানা হচ্ছেনা, হাসপাতালে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকা জরুরি।