বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২৮ পূর্বাহ্ন

মেলান্দহে ২০ বছর ধরে আলুপুরি বানাই, আইটেম বেগুনি-লুচি-ডাল

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৯৪ বার পঠিত

মেলান্দহে ২০ বছর ধরে আলুপুরি বানাই, আইটেম বেগুনি-লুচি-ডাল

বাকিরুল ইসলাম, জামালপুর প্রতিনিধি: জীবন-জীবিকার তাগিদে মানুষ নানা কাজে সময় পার করেন। জামালপুরে মেলান্দহে সি এন জি ষ্টেশনে একটি খুপরি ঘরে আলুপুরি বানাচ্ছিলেন দুজন। পাশের কড়াইতে ভাজা হচ্ছে সেই আলুপুরি। ভাজার পর আলুপুরি রাখা হচ্ছে সামনে কাচ দিয়ে ঘেরা কাঠের বড় বাক্সে। বাক্সের পেছনে দাঁড়িয়ে দুজন চাহিদামতো আলুপুরি ছোট বাটিতে রেখে বাটি তুলে দিচ্ছেন ক্রেতার হাতে। দাঁড়িয়ে ক্রেতা খাচ্ছেন রাজ্জাকের আলুপুরি। ২০ বছর ধরে তিনি আলুপুরি বানান।

আব্দুল রাজ্জাক দোকানে আলুপুরির পাশাপাশি তৈরি করা হয় কিছু আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি ও লুচি। লুচি দিয়ে খাওয়ার জন্য গামলায় রাখা হয়েছে বুটের ডাল।

সকালে আলুপুরি তৈরি করতে করতে রাজ্জাক বলেন, প্রতিদিন সকালে দোকান খুলি। লুচি বানাই, সঙ্গে বুটের ডাল। এগুলোর পরপরই তৈরি করি আলুপুরি। চলে রাত আটটা পর্যন্ত। দোকান বন্ধ করতে করতে রাত নয়টা বেজে যায়। প্রায় ২০ বছর ধরে আলুপুরি বানাচ্ছি।

খাবারের দরদাম সম্পর্কে রাজ্জাক বলেন, পেঁয়াজু আর পুরির সঙ্গে শস ফ্রি। তাঁর দোকানের বেশির ভাগ পুরি বিক্রি হয় পার্সেলে। লোকজন খান আবার যাওয়ার সময় বাড়ি বা দোকানের জন্য নিয়ে যান।

প্রতিদিন রান্নাবান্নায় কী পরিমাণ পণ্য লাগে জানতে চাইলে রাজ্জাক বলেন, প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ কেজি ময়দা, ১০ কেজি আলু, ৫ থেকে ৮ লিটার পাম অয়েল, ৫ কেজি পেঁয়াজ, ৩ কেজি বেগুন, ৪ কেজি বেসন, ৩ কেজি ডাল। প্রতিদিন ৪ থেকে ৬ হাজার টাকার পুরি, লুচি, আলুর চপ, বেগুনি ও পেঁয়াজু বিক্রি হয়। দোকানে একজন কর্মচারী। মালামাল, কর্মচারীর মজুরি দিয়ে দিনে গড়ে প্রায় হাজার টাকা থাকে। জিনিসের দাম বাড়লেও আগের মতোই আলুপুরি, বেগুনি, পেঁয়াজু, আলুর চপ পাঁচ টাকা করে বিক্রি করেন বলে জানালেন।

রাজ্জাকের বাবার নাম মো: সুরুজ শেখ। তিনি মেলান্দহ বাজারে দা, কাচি বটি বিক্রি করেন। একটি বেঞ্চে বসে আলুপুরি খাচ্ছিলেন হাবিবুর রহমান হাবীব(৫২)। তিনি বলেন, প্রায় ২ বছর ধরে তিনি এখানে আসেন পুরি খেতে। রাজ্জাক মিয়ার তৈরি আলুপুরি বেশ ভালো। কলেজছাত্র দুই বন্ধু মো. ছোটন ও রাকিব আলুপুরি খেয়ে প্রশংসা করলেন।

রাজ্জাক বয়স ৪৩ বছর। ১৯৮০ সালে ডিম বিক্রি করতেন। ছোট থেকে বিভিন্ন হোটেলে কাজ করতেন আব্দুল রাজ্জাক। সেই থেকে আলুপুরি তৈরির কাজ শিখেছেন তিনি। ২০০৭ সালের উপজেলা সি এন জি ষ্টেশনে তিনি পাশেই একটা চালা তুলে আলুপুরি তৈরি শুরু করেন।

রাজ্জাক শেখ বলেন, পৌরসভা দক্ষিণ আদিপৈত এলাকায় তিন কাঠা জমি কিনেছেন। সেখানে টিনের ছাউনি দিয়ে ছোট ঘর করে থাকেন। তার দুই ছেলে আর এক মেয়ে। ছেলেমেয়েদের সবার বিয়ে হয়েছে। তবে আলুপুরির দোকানটি এখান থেকে উঠিয়ে দেওয়া হতে পারে, সব সময় এমন শঙ্কায় থাকেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..