সাকিব আহম্মেদ বাপ্পি জেলা প্রতিনিধি মুন্সীগঞ্জ :
মুন্সীগঞ্জে স্বর্ণ চুরির অপবাদে মধ্যযোগীয় কায়দায় মুরাদ হোসেন রনি (৩৫) কে নির্যাতন করেছে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো: আওলাদ হোসেন সরকার। মধ্যযোগীয় কায়দায় কিশোর নির্যাতনের ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। সোমবার বিকালে স্বর্ণচুরির দায়ে রনি নামে একটি ছেলেকে বেধম প্রহার করা হয়েছে। কিন্তু রনি যে চুরি করেছে তা প্রমাণ করতে পারেনি কাউন্সিলর। কিন্তু তিনি দেদারছে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটাচ্ছে এমন ভিডিও সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
সোমবার (১২ জুলাই) সকালে মুন্সীগঞ্জ শহরের দক্ষিণ ইসলামপুরে এ ঘটনা ঘটে। মারধরকারী আওলাদ হোসেন মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল। নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের নাম মুরাদ হোসেন রনি। তিনি দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার মোরশেদ হোসেনর ছেলে।
এ ঘটনায় মোরশেদ হোসেন বাদী হয়ে আওলাদসহ আরও দুজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন, মামলা নং ২৫-০৭/২০২১। অপর অভিযুক্তরা হলে-দক্ষিণ ইসলাম এলাকার মনির হোসেন ও কালাই হোসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার স্থানীয় মনির হোসেনের বাড়ি থেকে চার ভরি স্বর্ণ ও ২২ হাজার টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় সোমবার সকালে চুরির অপবাদে মনিরের প্রতিবেশী রনিকে বাড়ি থেকে ধরে আনেন কাউন্সিলর আওলাদ হোসেনসহ মনির হোসেন ও তার ভাই কালাই। পরে মনিরের বাড়ির উঠানে রনিকে হাত-পা বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন আওলাদ। তবে মারধরের পরও চুরির বিষয়ে অস্বীকার করেন রনি। পরে রনির ছোটভাই থানা থেকে পুলিশ নিয়ে আসলে পুলিশের কাছে রনিকে সোপর্দ করেন মারধরকারীরা।
নির্যাতনের শিকার রনি বলেন, ‘সকালে বাসায় আইসা কাউন্সিলর আওলাদ জিজ্ঞাসার কথা বলে আমাকে মনিরদের বাড়িতে নিয়া যায়। সেখানে নিয়া আমারে হাত-পায়ে বান দিয়া মারে আর বলে চুরির কথা স্বীকার করতে। আমিতো স্বর্ণ নেই নাই, আমি কেন স্বীকার করুম? আমারে শুধু শুধু মারধর করছে, আমি এর বিচার চাই।’
মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমি রনিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসিনি। মনিরদের বাড়িতে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল, এটি জানতে পেরে আমি সেখানে যাই। গিয়ে দেখি অনেক মানুষ সেখানে। পরে ক্রেডিট নেয়ার জন্য তাকে মেরে ছেড়ে দিছি। পুলিশ আসলে চিকিৎসা করানোর কথা বলি। বিষয়টি আমার ভুল হয়েছে। মারধরের অধিকার আমার নেই, আমি অনুতপ্ত।’ সে যে চুরি করেছে প্রমাণ পেয়েছেন, এমন প্রশ্নে কাউন্সিল বলেন, ‘না, চুরির প্রমাণ পাইনি।’
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, মারধরের ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। কালাই ও মনির নামের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..