বৃষ্টির পানি সংকট বাংলার সোনালি আঁশ, এখন কৃষকের গলার ফাঁস
বাকিরুল ইসলাম, জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলা দীর্ঘ দিন বৃষ্টির পানি না হওয়ায় প্রখর রোদ ও অতিরিক্ত খরায় নদী-নালা,খাল-বিল শুকিয়ে পানি শূন্য হওয়ায় বাংলার সেই সোনালি আঁশ এখন কৃষকের গলার ফাঁসে পরিনত হয়েছে।
মেলান্দহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে,পানি সংকটের কারনে পাট চাষীরা পাট কেটে তা পানিতে জাগ দিতে না পেরে জমিতেই ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।অনেকেই আবার পাট কেটে পরিবহন যোগে বাড়তি খরচ করে খাল-বিলের বিভিন্ন নিচু জায়গায় স্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি দিয়ে পাট জাগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন।এতে পরিবহন,পানি সেচ ও শ্রমিক বাবদ পাট উৎপাদন কাজে বাড়িতে খরচ করতে হচ্ছে।
এ ছাড়াও তীব্র খরা ও পানি সংকটের কারনে ধান ও বিজতলা নিয়েও বিপাকে পড়েছে কৃষকরা।তীর্ব তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে পুড়ছে পাটক্ষেত,শুকিয়ে যাচ্ছে পাটগাছ।মাটি ফেটে চৌচির সব মিলিয়ে বলা যায় যে, মেলান্দহ বাংলার সেই সোনালি আঁশ এখন কৃষকদের গলার ফাঁস।
উপজেলার ৭নং চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের বেতমারী
গ্রামের পাট চাষী নিছার উদ্দীন বলেন, এ বছরে আমার ২ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, কিছু পাট কেটে রাস্তার পারে রোদে শুকাচ্চে পর্যাপ্ত পানি না থাকার কারনে জাগ দিতে পারছিনা।পাটের ফলন ৩০ থেকে ৪০ মণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমি পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে চিন্তার মধ্যে আছি।বাড়ীর পাশের পুকুরও শুকিয়ে গেছে, সম্ভাবত স্যালো মেশিন দিয়ে পুকুর টা পানি দিয়ে পূর্ণ করে তারপর পাট জাগ দিতে হবে।
৫নং নয়ানগড় গ্রামের বদি জানান,আমি পাট কেটে জমিতে রেখে দিয়েছি কিন্তু জাগ দেওয়ার কোন জায়গা না পেয়ে জমিতেই ফেলে রেখেছি যার ফলে পাট গুলো রোদে শুকিয়ে লাল হয়ে শক্ত হয়ে গেছে এখন বাড়তি খরচ করে খালবিলের নিচু জায়গায় পানি সেচ দিয়ে জাগ দিতে হবে এতে পাট উৎপাদনে লাভের অংশ পিপড়াই খাবে।
মেলান্দহ উপজেলার ২নং কুলিয়া ইউনিয়ন কাঙ্গালকুর্শা গ্রামের বাসিন্দা শাহাজান বলেন, আমাদের মাঠে এবছর প্রায় ৬বিঘা জমিতে পাট চাষ হয়েছে,কিন্তু জাগ দেওয়ার জায়গা না থাকায় কেউ কাটতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রশারণ কর্মকর্তা রিপন হোসেন বলেন, মেলান্দহ উপজেলায় পাট চাষে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।মাঠে মাঠে পাটের অবস্থাও ভাল।এখন পাট কাটার সময় চলছে।কিন্তু বৃষ্টির অভাবে কৃষক পাট নিয়ে হতাশায় রয়েছেন। মৃদু তাপদাহ চললেও আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। আমরা কৃষকদের রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দিচ্ছি।এতে যেমন খরচ কম তেমনি পাটের মানও ভালো থাকে।
মেলান্দহ উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুলাহ আল ফয়সাল বলেন, এ বছর উপজেলার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১৭ সহ ৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।