বাগমারা (রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বাগমারা উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের সুজন পালশা মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন পাঠদান বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচির বেহাল অবস্থা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে নন এমপিভুক্ত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র। লক্ষ্য করা যায় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতেই রাস্তার পাশে জলবায়ু পরিবর্তন এনজিও নামে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো রয়েছে। মাদ্রাসার নিকটস্থ কোনখানে প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড লক্ষ করা যায়নি। জানা যায়, প্রথমত ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইবতেদিয়া দাখিল মাদ্রাসা। পরবর্তীতে ২০০২ সালে মহিলা দাখিল মাদ্রাসা নামে প্রতিষ্ঠানটি পাঠদানের অনুমতি পায়। কিছুদিন প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে চললেও বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার দোড়গোড়ায়। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ সাত্তার প্রথমত প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত করার পর শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের পর বার বার চেষ্টা করেও প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত করা যায়নি এই মাদ্রাসাটি। মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করতে গিয়ে কয়েক লাখ টাকা খুইয়েছেন প্রভাষক আব্দুস সাত্তার। তবুও স্বপ্ন পূরণ হয়নি এই মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের। বর্তমানে বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- কর্মচারীরা। প্রায় দুই যুগ পার হলেও এমপিও হয়নি উপজেলার এই মাদ্রাসা। তিনটি ঘর বিশিষ্ঠ ইট দিয়ে গাঁথা টিনের ছাউনি ভাঙা বেঞ্চে কোন রকম পাঠদান হলেও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোন ভবন নির্মাণ করা হয়নি। যুবক বয়সে চাকুরীতে যোগ দিলেও শিক্ষকরা আজ বৃদ্ধে পরিণত হয়েছে কেউবা পেটের সন্ধানে অন্যত্র। কর্মসংস্থানের সুযোগ করে নিয়েছেন অথচ বেতন – ভাতা চোখে দেখেননি। টাকার অভাবে ভাল পাঞ্জাবি কিনতেও পারছেন না তারা। বেতন-ভাতা না পেয়ে কোন রকম জীবন পার করছেন এই মাদ্রাসার শিক্ষকরা।
মাদ্রাসার সুপারিটেনডেন্ট মোছা: আলেফ নুর খাতুনের সাথে ফোন সংযোগে না পেয়ে স্বামী প্রভাষক আব্দুস সাত্তার জানান, ১৯৯১ সাল হতে অদ্যবধি পর্যন্ত সুদক্ষ ম্যানেজিং কমিটি দ্বারা এই প্রতিষ্টান পরিচালিত হয়ে আসছে। ইতিমধ্যে ২০২১ সালে ২১ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য ফরম পুরন করেছে। ২০০৪ সাল হতে এ পর্যন্ত নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে আসছে। মাদ্রাসায় ১৬ জন শিক্ষক ৩ জন কর্মচারী ও ৫ জন ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে নিতিমালা অনুসারে আমার স্ত্রী আলেফ নুর এমপিওভূক্ত করার লক্ষে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মাদ্রাসা নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট গুজবকে তিনি অস্বিকার করেছেন।
এই মাদ্রাসার সহ: সুপার রেজাউল করিম জানান, আমাদের পেটে ভাত না থাকলে কিভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াবো। শিক্ষক হয়ে আমরা অসহায় জীবন যাপন করছি। আমরা এই সরকারের আমলে এমপিওভুক্তির আশা করছি।
স্থানীয় সূত্রমতে, এই মাদ্রাসায় এখন আর কোন ক্লাস নেয়া হয় না। মাদ্রাসাটিতে রাতের বেলায় শেয়াল বসবাস করে। মাদ্রাসার বারান্দায় দিনদুপুরে ভিক্ষুকরা বানিয়েছে ঘুমানোর জায়গা । এরই মধ্যে টিনসেড ঘরের চাল থাকলেও বেড়া ভেঙে চুরে গেছে কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ে। প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা লাভের শুরুতে লোক দেখানো গুটি কয়েক ছাত্রী নিয়ে পাঠদান শুরু করেছিলেন কিন্তু আদৌও ছাত্রী, শিক্ষক – কর্মচারী এই মাদ্রাসায় চোখে পড়ে না।
এই রকম আরো বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন নন এমপিওভূক্ত প্রতিষ্ঠানের চিত্র অগোছালো, অপরিচ্ছন্ন, মানহীন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়েছে।
মোঃ সাইফুল ইসলাম
বাগমারা রাজশাহী প্রতিনিধি
তাং ১৪/১০/২০২১ইং