সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন

ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৮৩ বার পঠিত

ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

ডেক্স রিপোর্ট
খুলনার ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচ এন্ড এফ পিও) ডাঃ জেসমিন আরার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছে। তাঁর যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালের শনির রাহুগ্রাস লেগে আছে। বেশিরভাগ রোগি এখন এ হেলথ্ কমপ্লেক্সমূখী না হয়ে শহরে যাচ্ছে ভাল চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য। এছাড়া ইউএইচ এন্ড এফপিও এর যোগসাজসে হাসপাতালে চলছে কতিপয় এক ডাক্তারের স্লিপ বাণিজ্য। এ বিষয় নিয়ে সরাসরি জেসমিন আরাকে অবহিত করলে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করতে তিনি নিষেধ করেন।
এখানেই শেষ নয়। প্রতিমাসে এ উপজেলার ৯টি কমিউনিটি ক্লিনিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা জেসমিন আরার পরিদর্শন করার কথা থাকলেও নামমাত্র কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করে পুরো ৯টি ক্লিনিক পরিদর্শন মর্মে ভূঁয়া মাসিক পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠান সিভিল সার্জন অফিসে। আর এই ভূঁয়া পরিদর্শন দেখিয়ে লুফে নেন আর্থিক সুবিধা। সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, গেল নভেম্বর মাসে ফুলতলা উপজেলার পয়গ্রাম কসবা, গাড়াখোলা ও নাউদাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকে কোন ভিজিট করেননি জেসমিন আরা। অথচ নভেম্বর মাসের কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখিত ওই ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেছেন বলে ভূঁয়া প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন খুলনার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে। সূত্রমতে আরো জানা যায়, জেসমিন আরা ওই কমিউনিটি ক্লিনিক তিনটিতে তাঁর পক্ষ থেকে কোন প্রতিনিধিও পাঠায়নি পরিদর্শনে।
এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা জেসমিন আরা তাঁর নামে বরাদ্দকৃত সরকারী গাড়ীটি ইচ্ছামত ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করে আসছেন। তাঁর যোগদানের পর থেকেই সরকারী এই গাড়ী ব্যবহার করে শপিং সহ বাসায় যাতায়াত করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ফুলতলা উপজেলা থেকে এই কর্মকর্তার বাসা খুলনার সাতরাস্তা মর্ডাণের মোড়। প্রতিদিন সকাল বিকাল দুই দফা যাতায়াতে প্রায় ১০০ কি.মি পাড়ি দিতে হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইউএইচসি/প্রশাসন-০২/২০২১/৭১৬নং স্মারকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তাদের অবগত করানো হয়েছে সরকারী গাড়ী যাতে ব্যাক্তিগতকাজে ব্যবহার না করা হয়। অথচ এই বিধি নিষেধকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে ফুলতলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সের এই কর্মকর্তা যোগদানের শুরু থেকেই বাসায় যাতায়াত সহ বিভিন্ন কাজে গাড়ীটি ব্যবহার করে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ হাসপালের এক কর্মচারি জানান, “কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শনের বই বেশিরভাগ সময় কিছু সিএইচসিপিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনতে বাধ্য করান এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা জেসমিন আরার নিজ কার্যালয়ে অলৌকিক পরিদর্শন করে পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া প্রায় প্রতিটি কর্মচারিদের সাথে রুঢ় আচারন করার অভিযোগ রয়েছে।
কথা হয় ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা জেসমিন আরার সাথে। তিনি জানান, “আমার একার দ্বারা পুরো হেলথ্ কমপ্লেক্স চালায়তে পারি না, অনেক সময় আমি ব্যাস্ত থাকলে আমার প্রতিনিধিদের কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শনে যায়, কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় দুই এক জায়গা ভিজিট করতে যেতে পারি নাই, এটা হতেই পারে”।
সরকারী গাড়ী ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহারের বিষয় জেসমনি আরা বলেন, আমার জন্যই তো অফিসের গাড়ী, আমাদের জন্য গাড়ীর তেল ফিক্সড করা আছে, বেশি ব্যবহার করলে আমার নিজের তেল খরচ বহন করতে হয়।
খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক পরির্দশনের বিষয় আমি খতিয়ে দেখব, এছাড়া সরকারী গাড়ী ব্যবহারের বিষয় আমার কাছে এ ধরনের কোন অভিযোগ আসে নাই, অভিযোগ পেলে আমি তদন্ত করে দেখব।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..