পঞ্চসারের চেয়ারম্যান ও স্ত্রী সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাকিব আহম্মেদ বাপ্পি :
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা ও তার স্ত্রী উম্মে সালমা ডালিয়া সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর রোববার পঞ্চসারে ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচনী সহিংসতায় টেলিফোন প্রতিকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী সিদ্দিকের চাচাতো ভাই ও তার সমর্থক রিয়াজুল শেখ নিহতের ঘটনায় আনারস প্রতিকের সদ্য বিজয়ী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম মোস্তফাকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গোলাম মোস্তফা (৫২), তার স্ত্রী ওম্মে সালমা ডালিয়া (৪০), তার ভাই গোলাম মাওলা (৫৫), গোলাম রহমান (৪২) সহ ১১ জনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে এ মামলার বাদি পঞ্চসার ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী সিদ্দিক।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন- মুসা (৪৫), মাসুদ (৪৬), মোস্তফা (৫৬), হুমায়ূন (৪৮), রাসেল পোদ্দার (৫৫), রমজান (৪৫) ও আক্তার খাঁন (৫০)।
গত বুধবার (১ ডিসেম্বর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আমলী আদালতে মামলার বাদী আলী সিদ্দিকের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা রুজু করতে সদর থানার ওসিকে আদেশ দেন সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক্ষমতাপ্রাপ্ত) আরফাতুল রাকিব। সেই সাথে আগামী ১৫/১২/২০২১ তারিখের মধ্যে মামলা অগ্রগতির প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। যার সি আর মামলা নং- ৪৭৩/২০২১।
আদালতের নির্দেশ মোতাবেক গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়। যার নং- ০৯, তারিখ- ০২/১২/২০২১।
গোলাম মোস্তফা সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে পেনাল কোড ১৪৩/১৪৯/৪৪৭/৪৪৮/৪২৭/৩৮০/৩০২/১১৪/৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৮ নভেম্বর পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে এজাহারে অভিযুক্ত আসামীরা নিহত রিয়াজুল শেখের বাড়িতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দা, লাঠি, লোহার রড, হকিস্টিক, বন্দুক সহ অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
হামলায় ঘরে থাকা ফ্রিজ, টেলিভিশন, খাট, শোকেজ সহ অন্যান্য ফার্ণিচার ভাংচুর করে আলমারীতে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণ সহ মোট ২৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
নিহত রিয়াজুল শেখ লুটপাটে বাধা দিলে অভিযুক্ত ওম্মে সালমা ডালিয়ার হুকুমে গোলাম মোস্তফার বন্দুকের বাট দিয়ে স্বজোরে কয়েকটি বারি মেরে মারাত্বক জখম করে। এসময় তার সঙ্গে থাকা অভিযুক্তরা তাকে পায়ের নীচে ফেলে পাড়াইয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে নিথর দেহ ফেলে চলে যায়। পরে রিয়াজুল শেখ কে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর ফরিদউজ্জামান জানান, মামলার আসামীরা আত্মগোপনে আছে। বিভিন্ন সময় তারা স্থান পরিবর্তন করছে। কয়েকবার গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তারা দেশের বাহিরে যেতে পারেনি। যে কোনো সময় আসামীদের গ্রেফতার করা হবে।