নীলফামারীর ডিমলায় তেল জাতীয় ফসল সরিষার চাষ
নুরুজ্জামান সরকার, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দশটি ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ মাঠে দুচোখ যতদুর যায় হলুদ আর হলুদ। সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে চারিদিকে ভরে গেছে উপজেলার দশটি ইউনিয়নের গ্রামের পর গ্রাম। সরিষা ফুলের সমারোহ ফসলের মাঠে ছড়াচ্ছে নান্দনিক সৌন্দর্য্য আর সরিষা ফুলকে ঘিরে মৌমাছি ও প্রজাপতিরা মধু সংগ্রহে ব্যস্ত ।
ডিমলা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায় ২০২১-২২ অর্থ বছরের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে প্রদর্শনী বাস্তবায়ন এবং রবি মৌসুমে প্রণোদনার কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ১১০০ কৃষকের মাঝে মাঝে সরিষা বীজ সহ সার বিতরন করা হয়। সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা আগ্রহী হয়েছেন সরিষা চাষে। বৃহষ্পতিবার (১৩ জানুয়ারী) দুপুর দুইটায় উপজেলার সুন্দর খাতা, বালাপাড়া, তিতপাড়া, খগাখড়িবাড়ী, পশ্চিম ছাতনাই, গয়াবাড়ী সহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায় বিস্তৃর্ণ মাঠে দুচোখ যতদুর যায় ততদুর সরিষা ফুলে হলুদের সমারোহ।
কৃষক আশরাফ আলী জানান আমি বিনা সরিষা-৯ চাষ করেছি। ফুল ও ফল ভালো হয়েছে সরিষা চাষে তেমন কোন খরচ হয় না হালচাষ, সার, বীজ এবং হালকা সেচ তাই অন্যান্য আবাদের চেয়ে খরচ কম। সরিষা থেকে আমরা ভালোমানের তেল সংগ্রহ ও সরিষা গাছ জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করতে পারব সেই সাথে সরিষা তুলে জমিতে বোরো ধান,ভ‚ট্টা, পাট জাতীয় ফসল বপন করা যাবে। আমার সরিষা ক্ষেত দেখে এ এলাকার অন্যান্য কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট সরিষা বিক্রি করে সংসার চালাতে কোন অসুবিধা হবে না।
উপজেলার মধ্যম সুন্দর খাতা গ্রামের স্থানীয় কৃষক মাহামাদুল হক জানান, তিন বিঘা জমিতে সরিষা বুনেছেন সরিষার গাছ ও ফুল ভালো হয়েছে সঠিক পরিচর্যা করলে আশানুরুপ ফলন পাওয়া যাবে এবং লাভের মুখ দেখবেন বলে জানান।
কৃষি সম্প্রসারন অফিসার কৃষিবীদ সহিদুল ইসলাম জানান আবহাওয়া অনুকুল থাকায় সরিষা চাষে কৃষকরা লাভবান মুখ দেখবে। উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন অফিসার নাজমুল হক বলেন, ডিমলা উপজেলা কৃষি অফিস হইতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সেকেন্দার আলী বলেন, তেল জাতীয় ফসলের আবাদ ও উৎপাদান বৃদ্ধির জন্য দশটি ইউনিয়নে রবি মৌসুমে প্রণোদনার কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামুল্যে সরিষা বীজ,সার দিয়ে উদ্ধুদ্ধকরণ ও মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি অফিসারগন কৃষকদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ প্রদান করছে । ডিমলা উপজেলায় দশটি ইউনিয়নে ৭ হাজার ৬৫ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও অর্জন হয়েছে ৭ হাজার ৬০ হেক্টর জমি।