নড়াইলে অসময়ের বৃষ্টিতে কৃষকদের মাথায় হাত।
১১ ডিসেম্বর ২০২১
মোঃ মামুন , স্টাফ রিপোর্টার
শীতের মধ্যে অসময়ের এ টানা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন নড়াইলের কৃষকরা। বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বোরো ধানের বীজতলা, হুমকির মুখে শীতকালীন সবজি ও ফসল। নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় পাকা আমন ধান। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, বৃষ্টি চলমান থাকায় তার পরিমাণ নিরুপন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অগ্রহায়ণ মাসে সাধারণত বৃষ্টি হয় না ধরে নিয়ে অনেক কৃষক বোরো মৌসুমের জন্য বীজতলা করেছেন অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে। বৃষ্টির পানিতে যার প্রায় আশিভাগ তলিয়ে গেছে। ফলে বোরো আবাদে বিলম্বিত হবে এবং খরচ বেড়ে যাবে। আর দেরিতে আবাদের কারণে আশানুরুপ ফলনও হবে না। এত করে লোকসানের মুখে পড়বে বোরো চাষিরা।
সদর উপজেলার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন বলেন, রবি ফসল- গম, শরিষা, মসুর ডাল, শীতকালীন সবজি- মরিচ, লাল শাক, বেগুন, মূলা, পাতা কফি, ফুল কপি ও ওল কপির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কারণ হঠাৎ বৃষ্টির পানি সহ্য করতে পারে না এসব ফসল।
কৃষি সম্প্রসরণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ দিনের টানা বৃষ্টিতে ১ হাজার ৪৫ হেক্টর জমির শতিকালীন ফসল, ১শ’ ৬২ হেক্টর জমির বোরো বীজতলা, ৫০ হেক্টর জমির মরিচ, ৭হাজার ৭৩০ হেক্টর জমির সরিষা, ৭ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমির মসুর ডাল এবং ২ হাজার ১ হেক্টর জমির গম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষক কুদ্দুস বলেন, আমি ১২ কেজি ধানের বীজ ফেলেছিলাম। তার চার খন্ডই তলিয়ে গেছে। গামলা দিয়ে পানি সেচে বীজতলা বাঁচানোর চেষ্টা করছি।
কৃষক ফরিদ জানান, ২ একর জমিতে পাকা আমন ধান ছিলো তার। অর্ধেকের বেশি কেটে জমিতে শুকানোর জন্য রেখেছিলেন। বাকিটা এখনও কাটা হয়নি। বৃষ্টিতে তা তলিয়ে গেছে। জমিতেই ঝরে গেছে অনেক ধান। এখন ওই ধান ঘরে তুলতে তার শ্রমিক খরচ পড়বে প্রায় দ্বিগুণ।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, গত ৩ দিনের টানা বৃষ্টিতে শতিকালীন ফসল ও সবজি, বোরো ধানের বীজতলা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এখনও বৃষ্টি শেষ না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ নিরুপন করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টির কারণে এ বছর রবি আবাদ বিলম্বিত হবে এবং এ কারণে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।