বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৬ অপরাহ্ন

দুর্নীতি অনিয়ম ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে কঠোরতা দেখালেও মানবতার ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিয়া

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৫ মার্চ, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

দুর্নীতি অনিয়ম ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে কঠোরতা দেখালেও মানবতার ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিয়া

এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ ::প্রতিদিনই মানবতার ফেরি করে বেড়াচ্ছেন মানবিক ডিসি হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।

দুর্নীতি, অনিয়ম এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কঠোরতা দেখালেও প্রতিদিনই মানবতার ফেরি করে বেড়াচ্ছেন সারাদেশে মানবিক ডিসি হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।

প্রায় প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন মানবিক সাহায্যের আবেদন নিয়ে আসছেন তার কাছে একধিক দুস্থ মানুষ। প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই করেই অতি দ্রুততার সাথে তাদের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করছেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম।

প্রতিদিনের মতো জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে নাছিমা আক্তার নামের এক সংগ্রামী নারীর হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন।

নাছিমা আক্তার স্বামীহারা দুই কন্যা সন্তানের জননী। তার স্বামী আব্দুল বারেক প্রায় এক দশক আগে মারা যান। সেই থেকে জীবনের কঠিন বাস্তবতার সঙ্গে লড়াই করে তিনি নিজের ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সমাজের প্রচলিত ধারণাকে অতিক্রম করে একজন নারী হিসেবে তিনি শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন, যা নিঃসন্দেহে তার অদম্য সাহস ও সংগ্রামী মানসিকতার প্রতীক।

সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার মুফতির গ্রামের সেই লজ্জাবতি কিশোরী নাছিমা এখন সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হয়েছেন। চিটাগাং রোডে চায়ের দোকানের পাশাপাশি অটোরিকশা চালিয়ে সংসার কোন রকম চালিয়ে নিচ্ছেন। ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে আয়ের সিংহভাগই দিতে হয় রিকশার মালিককে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে আমাদের প্রতিবেদককে নাছিমা বলেন,প্রতিদিন ৫০০ টাকা রিকশার ভাড়া মালিককে দিয়ে দুইশ তিনশ টাকা আয় থাকে। কোন কোন দিন জমার টাকাই উঠেনা।

এছাড়া সময় পেলে ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান চালান। আয় রোজগার কমে যাওয়ায় সম্প্রতি ভাড়া বাসা ছেড়ে চিটাগাং রোডে পরিতক্ত্য সরকারী জমিতে বস্তি ঘর করে সেখানেই কোন রকম রাত পার করেন।

তার বড় মেয়ে জ্যোৎস্নার বিয়ে দিয়েছেন অনেক ধার দেনা করে। কিন্তু ছোট মেয়ে ফারিহা আক্তার রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে।

এক প্রশ্নের জবাবে নাসিমা বলেন, কেউ যদি তাকে একটা অটো রিকশা কিনে দিতেন,তাহলে অন্তত প্রতিদিন রিকশার মালিককে দেয়ার ৫০০ টাকা বেচে যেতো। এতে অভাব অনটন কিছুটা হলেও দূর হতো বলে আশা নাসিমার।

আরেক প্রশ্নের জবাবে নাসিমা বলেন,অনেকে আমার রিকশা চালানোর ভিডিও করেন। কিন্তু কেউ কোন সাহায্য করেন না। তবে আজ ডিসি স্যার সাহায্য করলেন। আমি অনেক খুশি। আমি নামাজ পড়ে ডিসি স্যারের জন্য দোয়া করবো,যোগ করেন নাসিমা।

জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম নাছিমার এই আত্মনির্ভরশীলতা ও দৃঢ় মনোবলের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাকে উৎসাহিত করেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। আর্থিক অনুদান হাতে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন নাছিমা। এই সহায়তা শুধু তার জীবনের কঠিন পথে কিছুটা স্বস্তি দেবে না, বরং তাকে আরও আত্মপ্রত্যয়ী করে তুলবে।

এদিকে ফতুল্লা থানার কতুবপুর এলাকার বাসিন্দা এবং দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত নাজমা বেগমকে তাঁর চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ১০,০০০ টাকা অনুদান প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার চরঘারমোরা এলাকার স্বামী পরিতক্তা ও এক সন্তানের জননী সানজিদা ইসলামকেও ১০,০০০ টাকার আর্থিক অনুদান প্রদান করেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম। এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ সমাজের অসহায় ও পরিশ্রমী মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা তাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..