রাজশাহীতে এখন করোনার মহামারি চলছে। জেলার দুর্গাপুর উপজেলাও এখন করোনা হটস্পট। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত একমাসে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ৩১৮জন প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পরীক্ষা করে ছিলেন ৮৬১জন। গত একমাসে উপজেলায় মারা গেছেন করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ৮জন। বর্তমানে গ্রামে বাড়ি বাড়ি করোনা উপসর্গ রোগী দেখা দিয়েছে। কিসমত গণকৈড় ইউনিয়নের উজানখলসী গ্রামের সাহাবুদ্দিন (৩৪)। পরিবারের কয়েকজনসহ বেশ কিছুদিন যাবত সর্দিজ¦রে ভুগছেন। সামান্য করোনা উপসর্গ থাকলেও আমলে নিচ্ছেনা তাঁরা। সাধারণ জ¦র ভেবেই চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখনও কেন নমুনা দেননি? জানতে চাইলে সাহাবুদ্দিন বলেন, যদি নমুনায় পজিটিভ আসে বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হবে। তখন পুরো পরিবার নিয়ে আইসলেশনে থাকতে হবে। এ ভেবেই এখনও নমুনা দেননি। এমন সর্দিজ¦র এখন উপজেলার প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায়। করোনা উপসর্গ থাকলেও বিভিন্ন ভয়ে নমুনা দিতে অনাগ্রহ তাদের। ফলে করোনা সংক্রমনের আশঙ্কা বাড়ছে গ্রামেগঞ্জে পাড়ায় পাড়ায়। উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৮৬১ জনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়। এতে ফলাফলে পজিটিভ ৩১৮ জনের। আক্রান্তের এসব পরিবারকে দেওয়া হয় বিধি নিষেধ। সংক্রমণের হার উপজেলায় এখনও আশঙ্কাজনক। ৩৭ থেকে ৪০% এ উঠানামা করছে। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৮৭ জন রোগী বাড়িতে, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। তবে গত রোববার সিংগা হাটে মানুষের সমাগম ছিল। এছাড়াও দুর্গাপুর সদর বাজার এলাকায় কঠোর লকডাউন চললেও গ্রামের বাজার, চয়ের স্টলে স্টলে চলছে জমজমাট চায়ের আড্ডা। এসব স্টলে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। স্বাস্থ্য বিধির তোয়াক্কা না করেই জনসমাগম ঘটিয়ে স্টলগুলোয় টিভি ছেড়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে চায়ের আড্ডা। স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রামে পাড়া মহল্লা করোনার সংক্রমণ কমাতে এসব স্টলগুলোয় জোরালো বিধি নিষেধ আরোপ করা দরকার। প্রয়োজনে রাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। নইলে গ্রামে গ্রামে করোনায় আক্রান্তের পরিণতি আরও ভয়াবহের দিকে যেতে পারে। বখতিয়াপুর গ্রামের শরিফা বেগম, গোপালপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়া, পালশার কৌশিক আহমেদ জানান, তাদের এলাকায় বাড়ি বাড়ি করোনা উপসর্গের রোগী রয়েছে। সর্দি জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলেও তাঁরা করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। পরীক্ষার পর পজিটিভ আসলেই বাড়ি লকডাউন দিবে প্রশাসন। এ কারণে করোনার নমুনা দিতে আগ্রহ নেই অনেকের। অথচ অনেকেই উপসর্গ নিয়েই এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবা খাতুন বলেন, করোনা উপসর্গ সর্দিজ্বর কাশি দেখা দেওয়া মাত্র নমুনা দিতে হবে। সর্দিজ¦রে ভুগা ব্যক্তিরা করোনাক্রান্ত কিনা তা দ্রত সময়ে চিহ্নিত করার জন্য অ্যান্টিজেন টেস্ট ব্যবস্থা রয়েছে। উপজেলায় করোনার সংক্রমণের হার এখনও বেশি থাকলেও সে তুলনায় অ্যান্টিজেন টেস্ট হচ্ছে কম। তিনি বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। উপসর্গ দেখা দিলেই নমুনা দিতে হবে। তবেই সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ব্যবস্থা নিয়ে করোনা মোকাবিলা সম্ভব বলেন তিনি। আমার