দালালের খপ্পরে দুবাইয়ে গিয়ে আটকা তরুণ।
মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি:
মো: বাকিরুল ইসলাম:
লোভনীয় বেতনের চাকরির কথা বলে একটি দালাল চক্র জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মোঃ শিশির (১৯) নামে এক তরুণকে দুবাই নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন একটি ভুক্তভোগী পরিবার।
উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের চর ঘোষেরাপাড়া এলাকার দুবাই প্রবাসী মোঃ ফজলুল হকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে সূত্রে জানা যায়,উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নে চর ঘোষেরপাড়া গ্রামের মোঃ ফজলুল হক দীর্ঘদিন ধরে দুবাইয়ে থাকেন। এ সুবাদে লোভনীয় বেতনের চাকরির কথা বলে দুবাইয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করেন একই ইউনিয়নের পশ্চিম ঘোষেরপাড়া এলাকার মোঃ আব্দুল রফিকের ছেলে মোঃ শিশিরকে। পরে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে দুবাইয়ে ভালো বেতনের চাকরি দিবে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেন ফজলুল হক ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
দুবাইয়ে নিয়ে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে ৫ মাস আগে দুবাই যান শিশির। দুবাই পৌঁছানোর পর শিশিরকে কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও তাকে কোন কাজ দেয়নি। শিশিরের কাছ থেকে কৌশলে পাসপোর্ট প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নেন মোঃ ফজলুল হক। তারপরেই ফজলুল হক শিশিরকে একটি রুমে রেখে বাংলাদেশের চলে এসেছেন। তারপর থেকেই শিশিরের সঙ্গে তাঁর পরিবারের লোকজনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে।
দুবাইয়ে আটকে পড়া শিশিরের মা শিউলি বেগম বলেন, আমার ছেলের সাথে আর কথা হয় না। কেমন আছে কিছুই বলতে পারছি না। মাসখানেক আগে ফোন দিয়ে বলেছিলো, খুব কষ্টে আছে, দুইদিন পরপর একটু খাবার খা। রুমের মধ্যে আটকে রেখেছে। তার কাছ থেকে পাসপোর্ট ও কাগজপত্র নিয়ে নিয়েছে ফজলুল। এখন আমি আর কিছুই চাই না আমার ছেলেটারে আমি ফেরত চাই।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী আইয়ুব নবী নামে এক বলেন, ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে শিশিরকে দুবাই নিয়ে গেছে ফজলুল। তাকে কোন কাজকর্ম না দিয়ে। তাঁর কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে রুমের মধ্যে আটকে রেখেছে।
চর ঘোষেরপাড়া এলাকার স্থানীয়রা জানান, মোঃ ফজলুল হক তিনি দীর্ঘদিন ধরে দুবাইয়ে থাকতেন। এক মাস ধরে দুবাই থেকে দেশে এসেছেন। তিনি হচ্ছেন দালাল, ঘোষেরপাড়া এলাকা থেকেই দুজনকে দুবাই নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছেন। তাছাড়াও দেশের আরো বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন দুবাই নিয়ে গেছেন তিনি। সবার কাছে থেকেই কাগজপত্র নিয়ে রুমের মধ্যে আটকে রেখেছেন। তাঁর সাথে আরো দালাল চক্র রয়েছে। এলাকায় বিভিন্ন জেলার লোকজন ফজলুল হকের বিরুদ্ধে প্রতিদিন বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ আসতেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফজলুল হকে সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলিনি। সাংবাদিকরা তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
চর ঘোষেরপাড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, এই ঘটনাটি নিয়ে আমরা একটি মিটিং করেছিলাম। পরবর্তীতে আরো একটি মিটিং করা হবে। শুধু শিশির না তার সাথে আরো কয়েকজন আটকা পড়ে রয়েছে তাদেরকে উদ্ধার কিভাবে উদ্ধার করা হবে তা নিয়ে মিটিং করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ময়নুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগ হওয়ার পর পুলিশ গিয়েছিলেন। তাঁরা তো বৈধভাবে গিয়েছেন।