দাকোপে বিভিন্ন হাট বাজারে নিষিদ্ধ পলিব্যাগের ছাড়াছড়ি
স্টাফ রিপোর্টার
খুলনার দাকোপে বিভিন্ন হাট বাজারসহ যত্রতত্র ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে রমরমা ব্যবহৃত হচ্ছে এই পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্য। ফলে পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, ক্ষতিকারক বিষয়সমূহ বিবেচনা করে ২০০২ সালে সরকারি সিদ্ধান্তে সকল প্রকার পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজার জাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, বানিজ্যিক উদ্দেশে পরিবহন ও ব্যবহার সম্পর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। এই প্রজ্ঞাপন জারির পর কিছুদিন পলিব্যাগ ব্যবহার থমকে পড়লেও পূনরায় আবার বিভিন্ন পন্থায় বাজারে চলে এসেছে। মহামান্য হাইকোর্টও পলি ব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্য নিষিদ্ধ করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। একই সাথে দেশব্যাপী নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ পলিথিন কারখানা বন্ধ এবং যন্ত্রপাতি জব্দকরণের মাধ্যমে পলি ব্যাগের ওপর আইনি নিষেধাজ্ঞার পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কিন্তু পলিব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও আইন বাস্তবায়নে কোন কার্যকারি পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো এই উপজেলার সর্বত্র পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্য ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন হোটেল, মুদি দোকানসহ রাস্তার পাশে ও পাড়া মহল্লায় গড়ে ওঠা সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্য সামগ্রীর সাথে এই পলি ব্যাগ ফ্রি দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ছোট বড় বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। জানা গেছে, চালনা বাজারের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্য মজুদ করে বিভিন্ন হাট বাজারের ব্যবসায়ীদের নিকট পাইকারী দরে বিক্রি করছে। পলিব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্য ব্যবহারের ফলে রাস্তাঘাট, নদী, নালা, ড্রেন ও মাটির গর্তে আবর্জনায় ছড়িয়ে পড়ছে। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের লোক দেখানো অভিযানে দুই একজন কথিত নিষিদ্ধ এই পলিব্যাগ মজুদ বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে জরিমানা করলেও আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এর সংখ্যা দিনদিন বেড়ে চলেছে। এ ছাড়াও বাজারে নাইলন নেটের যে ব্যাগও ব্যবহার হচ্ছে তাও পলি ব্যাগেরমত পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য সমান ক্ষতিকর।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) খুলনা বিভাগীয় নেটওয়ার্ক কমিটির ও ওয়ার্কাস পাটির জেলা কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায় জানান, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এবং প্রশাসনের গাফিলতির কারনে প্রকাশ্যে এভাবে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ ও ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্য ব্যবহার হচ্ছে। পলিথিন বা প্লাষ্টিক একটি অপচনশীল বস্তু। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। এটি বন্দে প্রশাসনের আইনের সঠিক ব্যবহার এবং এলাকার সচেতন ব্যাক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
এবিষয়ে চালনা পৌরসভার মেয়র সনত কুমার বিশ্বাস বলেন, তিনি একটি জায়গা কেনার চেষ্টা করছেন। জায়গাটি না কেনা পর্যন্ত পলিথিনসহ ময়লা ফেলানোর কোন ব্যবস্থা তিনি নিতে পারছেন না।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিন্টু বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের মাধ্যমে পলিথিন ব্যাগ নির্মুল করা হবে।
এবিষয়ে অভিযান অব্যহত থাকবে। সাথে সাথে চটের ব্যাগ ব্যবহারে মানুষকে সচেতন করব এবং পলিথিন ব্যাগ মুক্ত উপজেলা গড়বো।