বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

ঢাকা-২০ : ইয়াবা সম্রাট মোহাদ্দেস এবার এমপি প্রার্থী, হতাশ ধামরাইবাসী!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৬১ বার পঠিত

ঢাকা-২০ : ইয়াবা সম্রাট মোহাদ্দেস এবার এমপি প্রার্থী, হতাশ ধামরাইবাসী!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ঢাকা-২০: ধামরাই আসনে মোহাদ্দেস হোসেন নামে এক ইয়াবা সম্রাট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী হয়েছেন। তাকে কয়েক দফায় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে (রিহ্যাব) চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বৃহত্তর একটি মাদক সিন্ডিকেট তার পেছনে নির্বাচনী শক্তি হিসেবে কাজ করায় রীতিমতো শঙ্কিত ও হতাশ হয়ে পড়েছেন পুরো ধামরাইবাসী।

তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে দিনরাত অবিরাম নির্বাচনী মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। এই সংবাদে খুশিতে আত্মহারা ধামরাই উপজেলা ও এর আশপাশের কয়েকটি উপজেলার সঙ্গবদ্ধ নেশাখোর চক্র। তাদের প্রত্যাশা এবার মাদকের ছড়াছড়ি হবে ধামরাই। পাশাপাশি মাদকের দাম হাতের নাগালের মধ্যে থাকবে।

সঙ্গবদ্ধ ওই নেশাখোর চক্রের প্রধান সংসদ সদস্য প্রার্থী ইয়াবা সম্রাট মোহাদ্দেস হোসেনের সফর সঙ্গী হয়ে কখনো সদল বলে আবার কখনো নিজেরা এককভাবে নির্বাচনী মাঠে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। এতে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয় এই কান্ডে হতাশ হয়ে পড়েছেন বিশ্লেষকরা।

যদি ইয়াবা সম্রাট মোহাদ্দেস হোসেন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তাহলে ধামরাই বাসির ভাগ্য কি হতে পারে.? আর এ নিয়েই বিভিন্ন মহলে চলছে নানান ধরনের জল্পনা কল্পনা।কি করে একজন নেশাখোর সংসদ সদস্য প্রার্থী হতে পারে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে।

কারণ তিনি ধামরাই উপজেলা পরিষদের একবার ভাইস-চেয়ারম্যান এবং সদ্য পদত্যাগ কারি উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সারাক্ষণ নেশার জগতে মত্ত থাকায় তার দুই আমলে ধামরাইয়ে দৃশ্যমান কোন প্রকার উন্নয়ন হয়নি।

তিনি সবসময় তার ঘনিষ্ঠ সহচর ধামরাই পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কমিশনার মোড় এলাকার বিভিন্ন নেশাখোরদের নিয়ে মেতে থাকতেন। পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের তালতলা ও চন্দ্রাইল মহল্লায় গোপন প্রমোদখানায় দিনরাত বিরতিহীনভাবে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ বিভিন্ন ধরনের নেশাদ্রব্য ও সুন্দরী রমণীদের নিয়ে অভিসারে মেতে থাকেন। এ ঘটনা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার।

যা প্রশাসন সহ ধামরাইয়ের প্রায় সব মানুষের জানা রয়েছে। কয়েক দফায় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে (রিহ্যাবে) তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য ভর্তি করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আবার তিনি পূর্বের ন্যায় একই কর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছেন। তার হেফাজতে রয়েছে একটি শক্তিশালী সঙ্গবদ্ধ মাদক সিন্ডিকেট। তাদের মধ্যে কোন একজন সদস্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লে তাদের পক্ষ নিয়ে তদবির চালাতেন মোহাদ্দেস।

তিনি উপজেলা কার্যালয়ে একটি মুহূর্তের জন্যেও অফিসিয়াল কাজে বসেননি। অনেকে দিনের পর দিন ঘুরেও তার কাছে এসে মনের ভাব প্রকাশ কিংবা আবেগ অভিযোগ অথবা কোন উন্নয়নমূলক কাজের দাবি করতে পারেনি। তিনি কারো ফোন কলও রিসিভ করতেননা।

আবার তিনি সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়েছেন। যার কারণে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ধামরাই ও একটি পৌরসভায় উপজেলা পরিষদের কোন উন্নয়ন দৃশ্যমান নেই । এমন অভিযোগ করেন ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও ভোটাররা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাধারণ ভোটাররা অভিযোগ করে বলেন, পৌনে পাঁচ বছর উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেও তিনি তার কার্যালয়ে বসেছেন খুবই অল্প সময়। কোন সপ্তাহে একদিন, কোন সপ্তাহে দুদিন, আবার কোন সপ্তাহে কিংবা কোন মাসেও একবার কার্যালয়ে বসে অফিসিয়াল কোন কাজ করার কোন নজির নেই তার।

সরকারি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, তিনি দাপ্তরিক কাজে সই করতেন অতি গোপনে এবং বেশিরভাগ সময় এসে রাতের আঁধারে সই করেছেন। আর বেশি সময়ই তিনি পৌর শহরের তালতলা ও চন্দ্রাইল মহল্লায় তার গোপন প্রমোদ খানায় মাদক ও সুন্দরী রমণীদের নিয়ে সময় কাটাতেন।

তাই আমরাও এই ভেবে হতাশ হয়ে পড়েছি। যদি ভোটারদের ভুলভাল বুঝিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তাহলে আমাদের চেয়ে হতভাগ্য আর কেউ হবেনা। আমরা চাই এ ধরনের উদ্ভট পরিস্থিতি কখনো না ঘটুক।

আমরা চাই গ্রেট সংসদ সদস্য তালিকায় মরহুম প্রধানমন্ত্রী আতাউর রহমান খান, আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য শিল্পপতি মরহুম জামাল উদ্দিন আহমেদ, দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইসরাফিল খোকন, বিএনপির চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মরহম ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বর্য়ীয়ান নেতা মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বেনজির আহমদ ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জনবন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা জালহাজ্ব এম এ মালেকের আসনে নেশাখোর মোহাদ্দেস হোসেন বা মাদক সম্রাট সংসদ সদস্য না হতে পারে সেজন্য আমরা বদ্ধপরিকর।

আমরা সবাই উপজেলা সহকারি ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং নির্বাচন কমিশন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে এই নেশাগ্রস্থ মাদক সম্রাটকে মাদক নিরাময় হাসপাতালে ভর্তি রেখে তাকে সূ-চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাদ্দেস হোসেন বলেন, জনগণের সেবক ছিলাম আবারো জনগণের সেবক হতে চাই। জনগণ আমাকে রাখালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমি তা যথাযথভাবে পালন করেছি। প্রমোদ বা নেশা করার বিষয়টি একান্তই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি ইয়াবা ট্যাবলেট বা মাদক সেবন করলেও মানুষের মাঝে তো কোন ধরনের মাতলামো বা ঝামেলা করিনা। কাজেই এই অভিযোগ করে আমার জয় কেউ থামাতে পারবেনা ইনশাআল্লা। আমি সারা জনম জনগণের রাখালের দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..