ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের দোকানে ভিড়
জসিম উদ্দিন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শীতের পোশাক বিক্রি। গরম
কাপড়ের দোকানগুলোতে জমে উঠেছে বিক্রি। হাসি ফুটতে শুরু করেছে বিক্রেতার
মুখে। ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের
চাহিদার শীর্ষে লেপ, কম্বল, সোয়েটার, ব্লেজার, হাত-পায়ের মোজা, টুপিসহ
নানান ধরনের গরম কাপড়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরম কাপড়ের দাম
অনেক বেশি। তাই নিম্ন আয়ের মানুষ ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন।
আজ সোমবার সরেজমিনে ঠাকুরগাঁও শহর ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি বালক উচ্চ
বিদ্যালয়ের (বড় মাঠ) উত্তর পার্শ্বে রাস্তার পাশের ফুটপাতে বসেছে গরম
কাপড়ের দোকান। এ সব অস্থায়ী দোকানে শীতের পোশাক ক্রয় করতে দেখা যায়
নারী-পুরুষের ভিড়।
বড় মাঠের এক কোণে গত ৬ বছর থেকে ব্যবসা করেন মকবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এত
দিন তেমন শীত পড়ছিল না, হঠাৎ গত তিন দিন থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে খুব শীত পড়ছে।
শীত থেকে বাঁচার জন্য সবাই শীতের পোশাক কিনতে বাজারে আসছে। সে জন্য
সোমবার সারা দিন দোকানে খুব ভিড় লেগেই আছে, আমাদের বেচাবিক্রিও বেড়ে
গেছে। গত এক সপ্তাহ আগেও সারা দিনে বিক্রি হতো দুই থেকে আড়াই হাজার
টাকার।’
কিন্তু এখন সারা দিনে প্রায় ১৫ হাজার টাকার শীতের পোশাক বিক্রি হয়েছে।
একই মার্কেটের অস্থায়ী দোকানের বিক্রেতা শামীম হোসেন বলেন, সারা দিন
ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে। গত এক সপ্তাহে যত বিক্রি হয়নি, সোমবারেই তার
চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। প্রতি বছরেই শীত পড়া শুরু হলে বিক্রিও বেড়ে যায়।
ওই মার্কেটে সামনে কথা হয় শাহপাড়া এলাকার রিমন ও বনি আমিনের সঙ্গে। তারা
জানান, কাপড়ের যা দাম, তাতে তাদের মতো গরিবের পক্ষে এবার শীতের কাপড় কেনা
সম্ভব নয়। তবুও তারা পরিবারের সদস্যদের জন্য সাধ্যমতো গরম কাপড় কিনেছেন
শহরের হাওলাদার সুপার মার্কেটের সামনে কথা হয় রহিমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি
এখান থেকে ছেলেমেয়েদের জন্য তিনটি গরম কাপড় কিনেছেন ১৬ শ টাকায়। তিনি
জানান, অন্যান্য মার্কেটের চেয়ে এখানে দাম তুলনামূলক কম।
ঠাকুরগাঁও মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সেলিনা আক্তার লিপি বলেন, কয়েক দিন
আগেও সুপার মার্কেট থেকে একটি সোয়েটার কিনেছিলাম ৬০০ টাকা দিয়ে। এখন একই
সোয়েটারের দাম হাঁকা হচ্ছে ১২শ টাকা। তিনি বলেন, শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে
বাড়ছে শীতবস্ত্রের দামও।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁওয়ের চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মামুন অর রশিদ
জানান, এ জেলায় এ সব গরম কাপড় উৎপাদিত হয় না। উৎপাদন পর্যায়ে দাম বৃদ্ধি
পেলে তেমন কিছু করার থাকে না। তা ছাড়া এখন পণ্যবাহী পরিবহন খরচ বেড়ে
গিয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ৩০০
পিচ কম্বল শীতার্ত মানুষের মাঝে বণ্টন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও
পৌর মেয়রদের হাতে দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে নগদ
অর্থ জমা পড়েছে আরও ৫ লাখ টাকা। চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল জানিয়ে আরও ২০
লাখ টাকার বরাদ্দের আবেদন জানানো হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান
বলেন, গরিব খেটে খাওয়া মানুষের শীত নিবারণের জন্য সরকারিভাবে শীতবস্ত্র
বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন, এনজিও এবং বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।
জসিম উদ্দিন ইতি
০১৭৫১০৭৯৮২৩
ঠাকুরগাঁও