সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

ঠাকুরগাঁওয়ে মা-বাবার ঠাঁই গোয়াল ঘরে, সন্তানকে লিখে দিয়েছেন কোটি টাকার সম্পদ, জসিম উদ্দিন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১২০ বার পঠিত

 

ঠাকুরগাঁওয়ে মা-বাবার ঠাঁই গোয়াল ঘরে,
সন্তানকে লিখে দিয়েছেন কোটি টাকার সম্পদ,
জসিম উদ্দিন ইতি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁওয়ে সন্তানকে নিজের প্রায় কোটি টাকার
সম্পত্তি লিখে দেয়ার পরও বৃদ্ধ বাবা মা’র ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে নারাজ
কোনো সন্তান। উল্টো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ
উঠেছে ছোট ছেলে ও ছেলের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। জীবনের শেষ বয়সে শারীরিকভাবে
অক্ষম অসহায় বৃদ্ধ পিতা-মাতার ঠাঁই এখন গোয়াল ঘরে।
ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের উত্তর বালুবাড়ি গ্রামের নগেন
চন্দ্র বর্মণের বয়স প্রায় ৭০ বছর ও স্ত্রী বিজয়া বালার বয়সও প্রায় ৬০
বছর। বয়সের ভাঁড়ে তেমন ভারি কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না এই দম্পতি। একসময়
নিজের ভবিষ্যতের চিন্তা না করে অনেক কষ্টে চার ছেলে ও এক মেয়েকে লেখাপড়া
শিখিয়ে উচ্চশিক্ষিত করে গড়ে তুললেও সেই প্রতিষ্ঠিত সন্তানেরা বৃদ্ধ পিতা
মাতার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে নারাজ। নিজের শেষ সম্বল দুটি বড় পুকুরসহ
১৪ বিঘা জমি আদরের ছোট ছেলে স্কুল শিক্ষক গণেশকে লিখে দেন নগেন। কিন্তু
ছোট ছেলে গণেশও বৃদ্ধ পিতা মাতার প্রতি অসৎ আচরণ করতে থাকেন।
বৃদ্ধ বাবা মাকে কিছু দিন বাটখারা দিয়ে মেপে মেপে ভাত খেতে দিলেও গত এক
সপ্তাহ তা বন্ধ করে দিয়েছে। উল্টো বাবা মাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে
বের করে দেয় ছেলে স্কুল শিক্ষক গণেশ ও তার স্ত্রী। তাই বৃদ্ধ নগেন ও তা
স্ত্রী বিজয়া বালার ঠাঁই হয়েছে এখন গোয়াল ঘরের বারান্দায়।
বৃদ্ধ এই দম্পতির অভিযোগ, নিজের সর্বস্ব সন্তানদের দেয়ার কারণে এই করুণ
পরিণতি তাদের। কোনো সন্তানই তাদের দায়িত্ব নিচ্ছেন না। তাই যত দিন বেঁচে
থাকবেন ততদিন ভরণ-পোষণ চান সন্তানদের কাছে। এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের
কাছে গিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা।
এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি এবং সহযোগিতা কামনা করেছেন
স্থানীয় সচেতন এলাকাবাসী। আর অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন ছোট ছেলে
স্কুল শিক্ষক গণেশ। বলেন, এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক।
বৃদ্ধ পিতা মাতার গোয়াল ঘরে গরুর সাথে থাকা অমানবিক। এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ
ও নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। তিনি জানান,
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমাজের প্রতিটি পরিবারেই এমন ঘটনা ঘটছে। উপজেলা
নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জানান, এ বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন। অভিযোগ পেলে
তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বাবা মায়ের ভরণ-পোষণ নিশ্চিত ও সন্তানদের বাবা মায়ের সঙ্গে
বসবাস বাধ্যতামূলক করার বিধান করে বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সালে আইন পাস
করলেও অনেক ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। অথচ আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক
সন্তানকে বাবা মা’র ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করতে হবে।
জসীম উদ্দিন ইতি

ঠাকুরগাঁও

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..