- ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে গাছে গাছে নান্দনিক সজনে ফুল
জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার গাছে গাছে এখন শোভা পাচ্ছে নান্দনিক সজনে ফুল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সজনার ভাল ফলনের আশা করছেন সজনা চাষি ও সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ।
উপজেলায় প্রচুর সজনার গাছ রয়েছে। বহুগুণে গুণান্বিত যাদুকরি সবজি সজনা। ঔষধি গুণাগুণেভরা, সুস্বাদু, কোনো উৎপাদন খরচ নেই, অধিক লাভজনক এবং বাজারে ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন সবজি সজনা।
শীতের রিক্ততা কাটিয়ে এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে সজনা গাছ। মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছি আর সজনা ফুলে আকৃষ্ট হচ্ছে পথিক।
পুষ্টিসমৃদ্ধ মৌসুমি সবজির মধ্যে সজনা অন্যতম, যা দেশের সর্বত্রই পাওয়া যায়। ড্রামস্টিক, মরিঙ্গাসহ দেশে-বিদেশে সজনা বহু নামে পরিচিত হলেও বাংলাদেশে সজনা নামেই পরিচিত। সজনার বহুবিধ ঔষুধি গুণাগুণ রয়েছে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে সজনাতে আ্যানিমিয়া, জয়েন্ট পেইন, ক্যান্সার, কোষ্টকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, ডায়রিয়া, হার্ডপেইন, ব্লাডপেসার, কিডনিতে পাথর ধ্বংস, মায়ের দুধ বৃদ্ধি করাসহ বিভিন্ন ঔষুধি গুণাগুণ রয়েছে। সজনা গাছকে প্রচলিত বিভিন্ন খাদ্য প্রজাতির মধ্যে সর্বোচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন উদ্ভিদ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বহুবিধ খাদ্যগুণ সম্পন্ন হওয়ার দক্ষিণ আফ্রিকায় সজনা গাছকে যাদুক গাছ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
এক বেসরকারি সংস্থা নবলোকের প্রকাশিত ‘নিউট্রিশন ফ্যাকটর অফ মরিঙ্গা লিপ’ এ উল্লেখ করা হয়েছে সজনার পাশাপাশি সজনা পাতা পুষ্টি ঘাটতি পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এতে দুধের চেয়েও বেশি ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জিংক বিদ্যমান। শরীরে কোলস্টরলের মাত্রা ঠিক রাখে, হজমের সাহায্য করে, শরীরে পুষ্টি ও শক্তি যোগায়, বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং সজনার গুড়ার পেষ্ট ত্বকের জন্য উপকারী ও লিভার এবং কিডনি সচারাচর দু’ধরণের হয়ে থাকে। মৌসুমি জাতের বেশিরভাগ আবাদ হয়ে থাকে।
এসব নানাবিধ গুণের কারণে প্রতিবছর দেশে প্রায় সবস্থানে প্রচুর পরিমাণে সজনার চারা ও ডাল রোপন করা হয়। একক কোনো চাষাবাদ কোথাও না হলেও প্রতিটি অঞ্চলে অন্যান্য ফসল আবাদের অনুপযোগী যেমন ক্ষেতের আইল, ঘরের বাঁধ এবং রাস্তার দু’পাশ দিয়ে মৌসুমি সজনার আবাদ রয়েছে।
সজনা চাষে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতে সব রকম পরামর্শ দিয়ে আসছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। হরিপুর উপজেলার ৬ ইউনিয়নে সজনার চাষ হয়। চলিত মৌসুমে প্রতিটি গাছ ফুলে ফুলে ভরে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার রুবেল হোসেন জানান, পুষ্টিগুণের দিক থেকে সজনা অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। সজনা লবণ সহিষ্ন একটি ফসল। অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রে পরিচর্যার প্রয়োজন হলেও অনেকটা পরিচর্যাও প্রয়োজন ছাড়াই সজনার উৎপাদন সম্ভব। সজনা অল্প দিনেই খাওয়ার উপযোগী হয় এবং বাজারজাত করা যায়। খেতে সু-স্বাদু ও বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় সবজির আবাদ অত্যন্ত লাভজনক।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..