জলঢাকায় ব্রীজ না থাকায় ভোগান্তি ০৪ গ্রামের মানুষের
নুরুজ্জামান সরকার, স্টাফ রিপোর্টার (নীলফামারী):
তিস্তার ভরা বণ্যার মৌসুমে তিস্তার পাশাপাশি তিস্তার বিভিন্ন ছড়া,ডোবা,নালা যেমন পানিতে ভরপুর হয়ে যায় ঠিক তেমনি ভরপুর হয়ে যায় আমাদের ঘাঘট নদি আর এই ঘাঘট নদিটিই আদর্শ বাজার থেকে টেক্কার মোড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে স্থানীয় জনগণ সেই যোগাযোগ রক্ষার্থে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চাহিদা পূরণ করে চলছেন তবে শুধুমাত্র মানুষ পারাপারের উপযোগী মাত্র, ভারী যানবাহন পারাপারের অনুপযোগী।
এই ঘাঘটের ওপরে ব্রীজ তৈরি করা হয়েছিল বহুদিন আগে,সরকার গঠিত সেই ব্রীজটি ভেঙে তলিয়ে গেছে ২০০৪ সালের দিকে।
বলছি জলঢাকার শৌলমারী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আদর্শ বাজার থেকে টেক্কার মোড় (বাজার) যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। ব্রীজ না থাকায় ১৬ বছর থেকে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করছে চার গ্রামের বাসিন্দারা। প্রতি বছর আদর্শ বাজারের দক্ষিণ, পশ্চিম পাড়ার (ক্বাজি পাড়া) এবং টেক্কার মোড়ের আশেপাশে বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরি করেন স্থানীয় জনগণ।
স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,শৌলমারীর ৬নং ওয়াড ও কৈমারী ইউনিয়নের টেক্কার মোড়ের সম্পর্ক এক দেহে দুই প্রাণের মত কারণ ৬নং ওয়ার্ডের মানুষের বেশিরভাগ আবাদি জমি কৈমারী ইউনিয়নের মধ্যে যার ফসল সংগ্রহ করার সময় চরম বিপাকে পড়তে হয় আমাদের। ফসল সংগ্রহ করার এই ব্রীজটি হলে আমাদের ব্যয় হত ১০০/১৫০ টাকা কিন্তু ব্রীজটি না থাকায় এখন অটো ভ্যানের পেছনে ব্যায় হচ্ছে ১০০০/১২০০ টাকা। আমরা ব্রীজটির ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীনও হচ্ছি।
স্থানীয়রা জানায় ২০০০ সালের দিকে সরকারি বরাদ্দে এই ঘাঘটের উপরে ব্রীজ নির্মাণ হয়েছিলো তবে কাঙ্ক্ষিত এবং উপযোগী না হওয়ায় পরের বছরের তিস্তার আকষ্মিক বণ্যায় ব্রীজটি তলিয়ে যায় তারপর আর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি তৎকালীন স্থানীয় সরকার ও জলঢাকা উপজেলা প্রশাসন এমনকি নীলফামারী আসনের সাংসদ মহোদয়ও ব্রীজটি তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু ১৬বছরেও বাস্তব রূপ নেয় নি।
সাধারণ মানুষজন শৌলমারীর ৬নং ওয়ার্ড থেকে টেক্কার মোড় যাওয়ার প্রধাণ মাধ্যম ঘাঘটের ওপর ব্রীজটি নির্মাণের জোর দাবী জানান এবং ভোগান্তি সহ্য করতে করতে অতিষ্ট হয়ে সাংবাদিকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এমনকি স্থানীয় সরকারের প্রতি ব্যাপক সামলোচনা করেন। তারা আরও বলেন, শুধু ভোটের আগেই নেতারা আমাদের কথা স্বরণ করেন এমনি সময় আমাদের ভোগান্তির খোঁজ খবর নেয় না।
জনতার নিজস্ব প্রয়োজনে,নিজস্ব উদ্যোগে শুধুমাত্র মানুষ পারাপারে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সংগ্রহ করার তাগিদে প্রতি বছর কঠোর পরিশ্রম করে গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছে বাঁশ সংগ্রহ করে ধারাবাহিকভাবে এই সাঁকোটি তৈরি করে দুই পাড়ের যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে অথচ স্থানীয় সরকার/উপজেলা প্রশাসন ১৬বছরেও পূণনির্মানের কোন উদ্যোগ নেয়নি। চার গ্রামের হাজারও মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পারাপার করতে হচ্ছে, ছোট ছোট বাচ্চারা সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে কঠিন এক আতঙ্কের মধ্য দিয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে আমরা জানতে পারি,ব্রীজটি না হওয়ার ফলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সব থেকে আশ্চর্যের ব্যাপার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোঁয়ায় চারিদিক আলোকিত হলেও শৌলমারী ইউনিয়নে আলো পৌঁছে নাই এমনকি ২০বছরেও নয়।
ব্রীজটির এই অবহেলিত রুপ সম্পর্কে ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফেমাস উদ্দিন বলেন,আমি বহুকাল থেকেই দেখছি এই করুণ অবস্থা, মানুষজন প্রতি বছর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপার হয় আমি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন ব্রীজটি তৈরি করে এলাকাবাসীর দূর্ভোগ নিরসন হয়।
শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব নুরুজ্জামান (জামান) বলেন,,আমার আগের চেয়ারম্যান কি করেছে জানিনা তবে আমি আমার সাধ্যমত উপর মহলে যোগাযোগ করবো।