শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৩০ বার পঠিত
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
স্টাফ রিপোর্টার
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে আজ ১৪ ডিসেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে সকাল ৯ টায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অদম্য বাংলায় শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এরপরই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, বিভিন্ন ডিসিপ্লিন, বিভিন্ন আবাসিক হল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, খুবি অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ, খুবি কর্মচারীবৃন্দ ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্টবৃন্দসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সম্মেলন কক্ষে ওয়েবিনারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, শহিদ বুদ্দিজীবীরা আমাদের দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের পটভূমি তৈরি, দিক-নির্দেশনা প্রদান, সংগঠনিক শক্তি তৈরি করে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের পথে প্রস্তুত করতে অবদান রেখেছেন এবং নিজেদেরকে শেষ পর্যন্ত আত্ম উৎস্বর্গ করেছেন। দেশ ও জাতির ইতিহাসে তারা অম্লান হয়ে থাকবেন। তবে এখন সময় এসেছে তাদের আত্মত্যাগের মূলে যে স্বপ্ন ছিলো তা বস্তাবায়নের পথে এগোনো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে মুক্ত করার যে দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন সে ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবীরা সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, সহায়তা করেছেন। ইতোমধ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে। আজ আমাদের এ দিনে আত্মনুসন্ধানের পথে এগোতে হবে। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশ্য, ত্যাগ, জীবন সংগ্রামে উজ্জীবীত হয়ে সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলার মতো মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। যাতে আমরা কোনো অপশক্তির চাপে মাথা নত না হই। বিভ্রান্তিতে না পড়ি। আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের খ্যাতনামা শিক্ষক প্রফেসর ড. মোঃ আবুল কাশেম। তিনি শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য, প্রেক্ষাপট এবং ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ এবং তৎপরবর্তী সময় পর্যন্ত বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরে সার গর্ভ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ইতিহাসের আলোকে দেখা যায়, সামাজিক বিপ্লব বা পরিবর্তনের ধারায় বুদ্ধিজীবীরা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলাদেশের দীর্ঘ মুক্তির সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বুদ্ধিজীবীরা অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছেন। প্রকৃতপক্ষে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করলেও দেখা যায় মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯মাস এবং তার কিছুদিন পরেও বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া বুদ্ধিজীবীদের ব্যাপ্তি ছিলো সারা দেশব্যাপী। অনেক প্রাইমারি শিক্ষকও বুদ্ধিজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। তাদেরও হত্যা করা হয়েছে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে জাতিকে মেধা শূণ্য করাই মূল উদ্দেশ্য ছিলো। এ পিছনে আলবদর, আলসাম্স বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা ছিলো এবং তারাই বুদ্ধিজীবীদের চিহ্নিত করা এবং হত্যার পেছনে বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেই বাংলাদেশের বিজয়কে ঠেকানো যায় নি, বাঙালি জাতিকে দমিয়ে রাখা যায় নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ করেছি। আজ এ দিনে আমাদের শহিদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার পাশাপাশি তাদের আর্দশ, উদ্দেশ্য অনুসরণ করা জরুরী। ইতিহাস চলমান। বর্তমানে দাঁড়িয়ে অতীতের অভিজ্ঞতায় ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথ অনুসন্ধান করতে হবে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাত। সঞ্চালনা করেন বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. রুবেল আনছার। শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে প্রার্থনা করা হয়। এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিলো সন্ধ্যায় শহিদ মিনার ও অদম্য বাংলা চত্ত্বরে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন। এর আগে সকাল ৮-৩০ টায় শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ ভবনের সম্মুখে কালোব্যাজ ধারণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের প্রাক্কালে শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে একটি র‌্যালি শুরু হয়ে অদম্য বাংলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..