এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়ার আপ্রাণ প্রচেষ্টায় ও তদারকিতে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নবনির্মিত ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে বহির্বিভাগের (আউটডোর) চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রবিবার (১৭ আগস্ট) থেকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এই ভবনে সেবা চালু হওয়ায় জেলার স্বাস্থ্যসেবা খাতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। এর ফলে পুরাতন ভবনের অসহনীয় ভিড় ও চাপ কমে রোগীদের আরও উন্নত ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক পরিবেশে সেবা প্রদান নিশ্চিত করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পুরাতন ভবনে জায়গার সংকট এবং নানাবিধ সীমাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বহির্বিভাগে আসা রোগী ও চিকিৎসকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল। বিশেষ করে, দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা এবং বসার জায়গার অভাবে রোগীরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেতেন। এই সমস্যা নিরসনেই মূলত নবনির্মিত ভবনটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। আশা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে রোগীদের সেই ভোগান্তি কমবে এবং নিঃসন্দেহে সেবার মান বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
নতুন ভবনে বহির্বিভাগের কার্যক্রম সম্পর্কে হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক, স্বাস্থ্য) ডাঃ মোঃ আবুল বাসার বলেন, “রোগীদের কষ্ট লাঘব করার জন্যই আমরা খানপুর হাসপাতালের নতুন ভবনে আউটডোর সেবা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজ পরীক্ষামূলকভাবে সেবা চালু করা হয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “১৭ তলা ফাউন্ডেশনের এই ভবনটির কাজ বর্তমানে ৪ তলা পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে ২৮ জন চিকিৎসকের বসার আধুনিক সুব্যবস্থা রয়েছে। প্রথম দিনেই ২৫ জন চিকিৎসক বহির্বিভাগে রোগীদের সফলভাবে সেবা প্রদান করেছেন।”
এদিকে, নতুন ভবনে আউটডোর সেবা চালু হওয়ায় সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তাদের প্রত্যাশা, এই পরিবর্তনের মাধ্যমে হাসপাতালটি আধুনিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থার প্রতীকে পরিণত হবে এবং তারা প্রকৃত অর্থেই ভালো সেবা পাবেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-জাপান মৈত্রীর প্রতীক হিসেবে ১৯৮৬ সালে ২০০ শয্যা নিয়ে এই হাসপাতালটির যাত্রা শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে এটিকে ৩০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালটিকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করার কাজ চলমান রয়েছে।
কর্তৃপক্ষের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৫০০ শয্যার অনুমোদন সাপেক্ষে এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট, কার্ডিওলজি বিভাগ, সিসিইউ, আইসিইউ, কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগ এবং নিউরোলজি বিভাগসহ একাধিক বিশেষায়িত ইউনিট চালু করা হবে। সর্বোপরি, হাসপাতালটিকে একটি মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করে নারায়ণগঞ্জের স্বাস্থ্যসেবাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়াই চূড়ান্ত লক্ষ্য।