কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনায় হচ্ছে ক্যানসার-কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিট
মোঃ মামুন স্টাফ রিপোর্টার
২৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হচ্ছে ৪৬০ শয্যা বিশিষ্ট সমন্বিত ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিট। এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (৯ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে আট বিভাগীয় শহরে সমন্বিত ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী, খুলনার সমন্বিত ইউনিটের মধ্যে ক্যানসারের জন্য ১১৫টি, কিডনির জন্য ১৬৫টি এবং হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য ১৮০টি শয্যা থাকবে।
খুলনা প্রান্তে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ থেকে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচন করেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এ সময় বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন, পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঁইয়া, জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানাসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএমএ ও সচিবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. রবিউল হাসান বলেন, ‘বর্তমানে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগের চিকিৎসা সীমিত পরিসরে চালু রয়েছে। ৪৬০ শয্যা বিশিষ্ট সমন্বিত ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিট চালু হলে রোগীরা পরিপূর্ণভাবে চিকিৎসাসেবা পাবেন।’
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে চিকিৎসাসেবার মান আরও একধাপ এগিয়ে গেলো বলে উল্লেখ করেন তিনি।
খুমেক হাসপাতালের সূত্র জানায়, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪৬০ শয্যা বিশিষ্ট সমন্বিত ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। ১৭ তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ১৫ তলা ভবন নির্মিত হবে। এর মধ্যে ১৮০ শয্যা ক্যানসার ইউনিট নির্মাণ হবে প্রথম থেকে সপ্তম তলা। এসব তলায় ক্যানসারের চিকিৎসাসেবার জন্য লিনিয়ার এক্সেলেটর ডসটি সিমুলেটর, ব্র্যাচেইথেরাপি ও কেমো থেরাপি বিভাগ থাকবে। ১৬৫ শয্যা কিডনি ইউনিট হবে অষ্টম থেকে ১১ তলা পর্যন্ত। এসব তলায় কিডনি রোগীর চিকিৎসার জন্য ডায়ালাইসিস ইউনিট, কিডনি ট্রান্সপ্ল্যাট ওটি, পোস্ট ট্রান্সপ্ল্যাট আইসিইউ বিভাগ থাকবে। এ ছাড়া ১১৫ শয্যা হৃদরোগ ইউনিট হবে ১২ থেকে ১৫ তলায়। এসব তলায় হৃদরোগের চিকিৎসাসেবার জন্য সিসিইউ, আইসিইউ, কার্ডিয়াক ওটি, পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জারি, ক্যাথ লাব বিভাগ চালু থাকবে। পাশাপাশি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি), তিন হাজার কেভিএ বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, এক হাজার কেভিএ জেনারেটর লিফট, ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে পাইলের লোড টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। শোর-পাইল কাস্টিং চলমান।
জানা গেছে, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৫ কোটি ৭২ লাখ ৮৩ হাজার এবং মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১২২ কোটি ৮২ লাখ ১৫ হাজার টাকা।