কিশোরগঞ্জে মাদক জুয়ার নীল দংশনে তরুণ ও যুব সমাজ।
সরকার সালাহউদ্দীন সুমন, নীলফামারী।
কথায় আছে একটি সুন্দর ফুল বাগানকে বিনষ্ট করার জন্য যেমন একটি হুতোম পেঁচাই যথেষ্ট, তেমনি তরুণ সমাজকে বিনষ্ট করার জন্য যথেষ্ট মাদকই। মাদকের নিষ্ঠুর পদাঘাতে কেউ লাখ লাখ টাকার ব্যবসা ধ্বংস করে সর্বস্বান্ত; কেউবা জড়িয়েছেন ভয়ংকর অপরাধ চক্রে। পরিবার তছনছ হয়ে গেছে কারও কারও। মাদকই এখন নীলফামারী জেলা কিশোরগঞ্জ উপজেলা অন্যতম প্রধান সমস্যা। পাওয়া যাচ্ছে হাত বাড়ালেই।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মাদকের ব্যবসা হচ্ছে তিনটি ধাপে। একটি দল সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মাদক নিয়ে আসে। তারা পৌঁছে দেয় এজেন্টদের কাছে। এজেন্টরা বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে খুচরা বিক্রেতাদের দিয়ে এসব মাদক বিক্রি করায়। মাদকের ভয়ংকর স্পট হয়ে উঠেছে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা মাগুড়া বসুনিয়া পাড়া,মাগুড়া সবুজ পাড়া,গাড়া গ্রাম টেপা দলিরাম,গাড়া গ্রাম বড় ক্যানেল, এলাকাগুলো। দরিদ্র পরিবারের নারী ও শিশুদের মাদক বিক্রি, পরিবহণ ও খুচরা বিক্রির কাজে ব্যবহার করছে নেপথ্যের হোতারা। তারা থেকে যাচ্ছে আইনের নাগালের বাইরে।মাদকের নেশায় বুঁদ এখানকার তরুণ-সমাজ। এতে করে ৯ ইউনিয়নের পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। কীভাবে মাদকের ভয়াল নেশা থেকে সন্তানদের দূরে রাখবেন, এমন দুশ্চিন্তায় পড়েছে বহু পরিবার। উপজেলার সীমান্তবর্তী পাঁচ ইউনিয়নের রোড ব্যবহার করে মাদককারবারিরা আনছে সর্বনাশা মাদক।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা নামলেই চলে অপরিচিতদের আনাগোনা, বসে জুয়ার আসর। আড়ালে চলে মাদক সেবন আর দেহব্যবসা। মাদকের কারণে আসক্ত হয়ে পড়েছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও। অনেক শিক্ষার্থীই নিয়মিত স্কুল কলেজ যাচ্ছে না। গ্রামের প্রায় ঘরে মিলছে নেশাগ্রস্ত সন্তান। এসব নিয়ে চরম অসহায় পরিবারগুলো।
মাগুড়া ইউনিয়নের বসুনিয়া পাড়া গ্রামের, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (৫৫) এক বৃদ্ধ জানান, তার ১৮ বছর বয়সি ছোট ছেলে মাদকের নেশায় মানসিক রোগীর মতো হয়ে পড়েছে। মাদক সেবনের টাকা না পেলে মারধর করে। এলাকার মানুষজনের জিনিসপত্র চুরি করে। এই বৃদ্ধ বয়সে গ্রামের মানুষের সামনে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না।
মাদকাসক্ত ছেলেকে নিয়ে একই সমস্যা পড়েছেন একই গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বৃদ্ধ। তার ছেলেও মাদকাসক্তদের সঙ্গে মিশে নেশায় পড়েছে। মাদকের টাকা না পেলে ছেলে পকেট কিংবা আলমারি টাকা চুরি করে মাদক সেবন করছে।
বড় ভিট, পুটিমারি, নিতাই, বাহাগীলি, চাঁদ খানা, কিশোরগঞ্জ, রণচন্ডী, গাড়া গ্রাম, মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, মাদকসেবী বিক্রিতার কারণে দিনদিন গ্রামগুলোতে অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশ কয়েকজনকে হাতে নাতে ধরে বিচার করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। তবে তারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হয়ে নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করছেন গ্রামগুলো থেকে মাদকের সমস্যার সমাধান করার।
সালাহউদ্দীন।
মোবাইল ০১৭১২৮১৪৯২২
নীলফামারী।