তরিকুল ইসলাম (তারেক) রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি ঃ
সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে ২০২০ সালের আজকের দিনে সন্ধ্যায় কিংবদন্তী এন্ড্রু কিশোর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ভক্তদের হৃদয়ে রেখে যাওয়া বহু কালজয়ী গানের জাদুকর তার অসাধারণ গায়কির জন্য পেয়েছিলেন কণ্ঠরাজ উপাধিও। তার পুরো নাম এন্ড্রু কিশোর কুমার বাড়ৈ। তবে এন্ড্রু কিশোর হিসেবেই তিনি দেশ-বিদেশে সমাদৃত হন। ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ এবং মাতা মিনু বাড়ৈ রাজশাহী শহরের বুলনপুর মিশন গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। মায়ের কাছেই তার পড়াশোনায় হাতেখড়ি হয়েছিল। তার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে রাজশাহীতে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেছেন। তার মা ছিলেন সংগীতানুরাগী। আর তার প্রিয় শিল্পী ছিলেন ভারতের কিশোর কুমার। প্রিয় শিল্পীর নামানুসারে তাই তার সন্তানের নামের সাখে মিল রেখে ‘এন্ড্রু কিশোর’ রাখেন।
মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই তিনি মাত্র ছয় বছর বয়সে সংগীতাঙ্গনেই পা রাখেন। সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন ওস্তাদ আব্দুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে। পরে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি রাজশাহী বেতারে নজরুল, রবীন্দ্র, লোকসঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান শাখায় তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭৭ সালে চলচ্চিত্রে তার প্রথম গান মেইল ট্রেন চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই।’
এরপর ১৯৮২ সালে এন্ড্রু কিশোর বড় ভাল লোক ছিল চলচ্চিত্রের ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’ গানের জন্য শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তার প্রথমবারের মত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এরপর ১৯৮৭ সালে তিনি সারেন্ডার, ১৯৮৯ সালে ক্ষতিপূরণ, ১৯৯১ সালে পদ্মা মেঘনা যমুনা, ১৯৯৬ সালে কবুল, ২০০০ সালে আজ গায়ে হলুদ, ২০০৭ সালে সাজঘর ও ২০০৮ সালে কি যাদু করিলা চলচ্চিত্রের গানের জন্য আরও সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
এছাড়া তিনি তার জীবদ্দশায় পাঁচবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার ও দুইবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।