শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন

ককটেল ফাটিয়ে দিন-দুপুরে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় অস্ত্র, গুলি ও ককটেলসহ আন্তঃজেলার ডাকাত চক্রের ৯ সদস্য গ্রেফতার”

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১০১ বার পঠিত

ককটেল ফাটিয়ে দিন-দুপুরে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় অস্ত্র, গুলি ও ককটেলসহ আন্তঃজেলার ডাকাত চক্রের ৯ সদস্য গ্রেফতার”

 

মনসুর শেখ গাজীপুর জেলা ব্যুরো প্রধান

১৬/০৮/২০২২ তারিখ দুপুর অনুমানিক ০২.০০ ঘটিকার সময় কাশিমপুর থানাধীন এনায়েতপুরস্থ জনাব আলীর জুট কারখানার সামনে মোটর সাইকেল ও অটোরিক্সা যোগে ৬/৭ জন ডাকাত ককটেল বিস্ফোরণ ও চাপাতির আঘাতের মাধ্যমে ডাচ বাংলা ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং রকেট এর ডিএসএম শাহেদ শরীফের কাছ থেকে ৫,২২,০০০/-(পাঁচ লক্ষ বাইশ হাজার) টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় কাশিমপুর থানার মামলা নং-১১(৮)২২, ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড তৎসহ বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইন ২০১২ এর ৪/৫ রুজু হয়। উক্ত মামলার তদন্তকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তদন্তে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ আসামী ১। ইউসুফ আলী রানা (৩৫) ও ২। বিধান হালদার (৩১) দ্বয়কে কাশিমপুর থানাধীন তেতুইবাড়ী সাকিনস্থ সানসিটি এলাকা হইতে অভিযান চালিয়ে গত ১৯/০৯/২০২২ ইং রাত আনুমানিক ২২.৩০ ঘটিকায় গ্রেফতার করা হয়। আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায় উক্ত রাত আনুমানিক ০০.০৫ ঘটিকায় কাশিমপুর থানাধীন লস্করচালা সাকিনস্থ লোহাকৈর রোড সংলগ্ন খান ব্রাদার্স এর খেলার মাঠে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ সহ ডাকাতি সংঘটনের জন্য সমবেত হবে। জনাব আবু তোরাব মোঃ শামছুর রহমান, উপ-পুলিশ কমিশনার, অপরাধ (উত্তর) বিভাগ, জিএমপি এর নির্দেশনায় জনাব রেজওয়ান আহমেদ, পিপিএম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) উত্তর বিভাগ, জিএমপি, গাজীপুর এর নেতৃত্বে ০৪ টি টিম মিলিতভাবে কাশিমপুর থানাধীন লস্করচালা সাকিনস্থ লোহাকৈর রোড সংলগ্ন খান ব্রাদার্স এর খেলার মাঠের আশেপাশে গোপনে অবস্থান নেয় এবং আনুমানিক ০০.২৫ ঘটিকার সময় কয়েকজন আসামী মাঠের ভেতরে প্রবেশের সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ পুলিশ তাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা অতর্কিতভাবে পুলিশের উপর আক্রমণ করে এবং তাদের নিকট থাকা বিস্ফোরক দ্রব্যাদি, চাপাতি দিয়ে হামলা করতঃ তাদের নিকট থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা পুলিশের উপর গুলিবর্ষণ শুরু করে এবং বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রচ- শব্দ ও ধোঁয়ার সৃষ্টি করে। ডাকাতদের অতর্কিত আক্রমণের শিকার হয়ে পুলিশ নিজেদের জীবন ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। অন্ধকারের ভিতর ডাকাত দলের সদস্যগণ উপুর্যপরি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালাতে থাকলে তাদের ছোড়া গুলির আঘাতে আহত নিজ দলের ডাকাত সদস্য সোলাইমান আকন @ সোলেমান আকন (৪০) কে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। ঐ সময় ডাকাত দলের বিস্ফোরক দ্রব্যের আঘাতে কং/১০৮৩ মোঃ মোস্তাফিজার এর ডান হাতের বাহুতে জখম প্রাপ্ত হয়।

 

উভয় পক্ষের গুলাগুলির পর ঘটনাস্থল হতে দৌড়ে পালানোর সময় ডাকাতদের ধাওয়া করে ৭ (সাত) জনকে গ্রেফতার করা করা হয় এবং তারা ১২/১৩ জন ছিল বলে তাদের কাছে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলঃ ১। আনোয়ার হোসেন @ মিতা আনোয়ার (৩৫), পিতা-মৃত ইউসুফ আলী, মাতা-ফাতেমা বেগম, গ্রাম-নীলফামারী বাজার (বন বিভাগ), থানা ও জেলা-নীলফামারী, ২। মোঃ রুবেল (৪০), পিতা-মৃত আঃ সোবাহান, মাতা-রোকেয়া বেগম, গ্রাম-চর গোবিন্দপুর, থানা ও জেলা-মাদারীপুর, ৩। বাবুল বেপারী@ বাবু (৩৬), পিতা-আবেদ আলী বেপারী, মাতা-জয়গুন বিবি, গ্রাম-পূর্ব রসুলপুর ৫নং গলি, থানা-কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা, ৪। জাকির হোসেন @ শুক্কুর@শুক্কুর ফরাজী (৪০), পিতা-মৃত ফজলুল হক, মাতা-রাহেলা বেগম, গ্রাম-বিলদৈয়ানা, থানা-নড়িয়া, জেলা-শরীয়তপুর, ৫। সোলাইমান আকন @সোলেমান আকন (৪০), পিতা- মোঃ নুরুল আকন @ নুরু, মাতা-রাশিদাবেগম, গ্রাম-কাজিকান্দি, থানা-নড়িয়া, জেলা-শরীয়তপুর, ৬। সাগর বাড়ই (৪১), ৭। মৃদুল বাড়ই@আকাশ (৪৫), উভয় পিতা-শ্যামল @ শ্যামইল বাড়ই @ শ্যামল বাড়ই, মাতা-রিতা বাড়ই, সাং-পশ্চিম নারিকেলবাড়ী, থানা-কোটালীপাড়া, জেলা- গোপালগঞ্জ। গ্রেফতারকালে ডাকাতদের কাছ থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ১ রাউন্ড তাজা গুলি, ১২ টি অবিস্ফোরিত ককটেল, ৩ টি চাপাতি, ২ টি মোটরসাইকেল, ২ টি হেলমেট, ১ টি অটোরিকশা, ২ রাউন্ড পিস্তলের গুলির খালি খোসা, ৭ রাউন্ড কার্তুজের খোসা, বিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ ও ছেড়াফাঁটা স্কচটেপ, ১টি ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। ডাকাত দলের সদস্যদের ছোড়া গুলিতে আহত ডাকাত সোলাইমান আকন @ সোলেমান আকন এবং বিস্ফোরক দ্রব্যের আঘাতে আহত পুলিশ কং/১০৮৩ মোঃ মোস্তাফিজার রহমানকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, গাজীপুরে প্রেরণ করা হয়। এ সংক্রান্তে কাশিমপুর থানায় ডাকাতির প্রস্ততি গ্রহণ, কর্তব্যরত পুলিশের উপর আক্রমণ, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এবং বিষ্ফোরকদ্রব্য মজুদ ও বিষ্ফোরণ ঘটানোর অপরাধে চারটি পৃথক মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

উল্লেখ্য যে, এ ডাকাত চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ ককটেল ফাটিয়ে ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে মানুষের মাঝে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে অভিনব কায়দায় ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রকাশ্য দিবালোকে ডাকাতি করে আসছিল। ডাকাতদের নাম ঠিকানা সংগ্রহপূর্বক সিডিএমএস এ অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, তাদের বিরুদ্ধে

১। টাঙ্গাইল এর বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার, এফআইআর নং-১/০২, তারিখ- ১২ মার্চ, ২০১৯; ধারা- ১৭০/১৭১/৩৯২ পেনাল কোড-১৮৬০;

২। ডিএমপি এর উত্তরা পশ্চিম থানার, এফআইআর নং-১৫/৩৪০, তারিখ- ০৫ জুলাই, ২০১৮; ধারা- ১৯-ধ/১৯(ভ) ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন;

৩। ডিএমপি এর উত্তরা পশ্চিম থানার, এফআইআর নং-১৬/৩৪১, তারিখ- ০৫ জুলাই, ২০১৮; ধারা- ৩৯৯/৪০২ পেনাল কোড-১৮৬০;

৪। গাজীপুর এর কালিয়াকৈর থানার, এফআইআর নং-০১, তারিখ- ০১ এপ্রিল, ২০১০; ধারা- ৪ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২ সংশোধনী ২০০৯;

৫। গাজীপুর এর কালিয়াকৈর থানার, এফআইআর নং-০২, তারিখ- ০১ এপ্রিল, ২০১০; ধারা- ১৯ (ধ)/১৯(ভ) ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন;

৬। ডিএমপি এর নিউমার্কেট থানার, এফআইআর নং-১৩, তারিখ- ১৭ জুলাই, ২০০৮; ধারা-১৯/১৯ (ধ) ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন;

৭। শরীয়তপুর এর নড়িয়া থানার, এফআইআর নং-৯, তারিখ- ০৮ মে, ২০১৭; ধারা-৩/৪ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইন; তৎসহ ১৪৩/৩২৩/৩২৪/১১৪/ ৩০৭/৩২৬/৩৮০/৪২৭/৩৪ /৪৪৮/ ৪৪৭ পেনাল কোড-১৮৬০;

৮। গোপালগঞ্জ এর কোটালীপাড়া থানার, এফআইআর নং-৫, তারিখ- ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬; ধারা- ৪/৫ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২ সংশোধনী ২০০৯;

৯। গোপালগঞ্জ এর কোটালীপাড়া থানার, এফআইআর নং-৯, তারিখ- ১১ জুন, ২০১৬; ধারা- ৩২৮/৩৭৯ পেনাল কোড-১৮৬০;

১০। জিএমপি এর কোনাবাড়ী থানার, এফআইআর নং-১৪/১৯০, তারিখ- ১২ ডিসেম্বর, ২০২০; ধারা- ৩৯৯/৪০২ পেনাল কোড-১৮৬০;

১১। ঢাকা এর আশুলিয়া থানার, এফআইআর নং-১৩/৩৬২, তারিখ- ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬; ধারা- ৩৯৪/৩৯৫/৩৯৭/৪১২ পেনাল কোড-১৮৬০;

১২। জয়পুরহাট এর জয়পুরহাট সদর থানার, এফআইআর নং-৫০, তারিখ- ২২ মে, ২০১৪, ধারা- ৩২৮/৩৭৯ পেনাল কোড-১৮৬০ বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে।

১৩। রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার মামলা নং-৫৬, তারিখ-৩০/০৭/২০১১ ইং, ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে।

১৪। জয়দেবপুর থানার মামলা নং-৬৫(৯)০৭, ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে।

১৫। মুন্সিগঞ্জ থানার মামলা নং-৩৮(১০)০৮, ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে।

১৬। মুন্সিগঞ্জ থানার মামলা নং-৪২(২)০৮, ধারা- ১৯(ক) ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে।

 

পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল প্রকার অপরাধজনক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..