শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন

ইউসুফ খান যেভাবে দিলীপ কুমার হয়ে উঠলেন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১
  • ১৪৯ বার পঠিত

 

স্টাফ রিপোর্টার জসীমউদ্দীন ইতি

১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে তার এক সহকারী
জানালেন যে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ফোন করেছেন এবং
দ্রুত তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। নওয়াজ শরীফ ফোন ধরা মাত্রই বাজপেয়ী
বলছেন, ‘এটা কী হচ্ছে? আপনি যখন লাহোরে আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন তখন
পাকিস্তানি সেনারা কারগিলে আমাদের ভূ-খণ্ড দখল করেছে’।

জবাবে নওয়াজ বললেন, ‘আপনি যা বলছেন তা নিয়ে আমার কোনো ধারণাই নেই। তবে
আমাকে কিছুটা সময় দিন। আমি সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফের সঙ্গে কথা বলব
এবং জেনে আপনাকে দ্রুত কল ব্যাক করবো’।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ মেহমুদ কোরেশী তার আত্মজীবনীতে এ ঘটনা
উল্লেখ করে বলেছেন যে, ওই ফোনালাপ শেষ হওয়ার আগে বাজপেয়ী নওয়াজ শরীফকে
বলেন, ‘আমি চাই আমার পাশে বসা একজনের সঙ্গে আপনি কথা বলুন, যিনি আমাদের
আলোচনা শুনেছেন’। আর এটা এমন একজনের সঙ্গে ছিলো যার কণ্ঠ শুধু নওয়াজ
শরীফের কাছেই নয় বরং পুরো ভারতীয় উপ-মহাদেশেই সুপরিচিত ছিলো।

এটা ছিলো দিলীপ কুমারের কণ্ঠ, যা কয়েক দশক ধরে সিনেমাপ্রিয় ভারত ও
পাকিস্তানের মানুষের হৃদয় শাসন করেছে।

দিলীপ কুমার নওয়াজ শরীফকে বলেছিলেন, ‘মিঞা সাহেব এটা আমরা আপনার কাছ
থেকে আশা করিনি। আপনি সম্ভবত জানেন না যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যখন
উত্তেজনা দেখা দেয় তখন ভারতে মুসলিমদের অবস্থা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কখনো
ঘরের বাইরে যাওয়াটাও তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। দয়া করে পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছু একটা করুন’।

দিলীপ কুমার তার ছয় দশকের ক্যারিয়ারে মাত্র ৬৩টি সিনেমায় অভিনয়
করেছেন। কিন্তু তিনি হিন্দি সিনেমায় অভিনয় শিল্পকে নতুন রূপ
দিয়েছিলেন। খালসা কলেজে পড়ার সময় দিলীপ কুমারের সহপাঠী ছিলো রাজ
কাপুর। তারা ঘোড়ার গাড়িতে করে প্রায় ঘুরে বেড়াতেন। এ সময় রাজ কাপুর
পার্সি মেয়েদের সঙ্গে ফ্লার্ট করতেন তখন দিলীপ কুমার এক কোণায় গিয়ে
চুপ করে বসে থাকতেন এবং তাদের দিকে কমই তাকাতেন। কেউ জানতো না যে এই
ব্যক্তিই একদিন ভারতীয় সিনেমাকে নীরবতার ভাষা সম্পর্কে শেখাবেন যা অনেক
লম্বা সংলাপের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হবে।

বিরতি দেওয়ার গুরুত্ব জানতেন দিলীপ কুমার

১৯৪৪ সালে দিলীপ কুমার যখন ফিল্ম ক্যারিয়ার শুরু করেন তখনকার বেশিরভাগ
অভিনেতা একটি স্টাইলে পারফর্ম করতেন যাকে বলা হতো ‘লাউড অ্যাক্টিং’ এবং
এটি এসেছিলো মূলত পার্সি থিয়েটারের প্রভাবে।

বিখ্যাত গল্প লেখক সালিম বলছেন, ‘দিলীপ কুমার যেসব চরিত্রে অভিনয় করতেন
তার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো পর্দায় ফুটিয়ে তুলতেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে নীরব
হয়ে যেতেন কিন্তু সেটাও দর্শকের ওপর গভীর ছাপ রেখে যেতো’।

মুঘল-ই-আযম সিনেমায় প্রখ্যাত অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কাপুরের চরিত্র ছিলো খুবই
প্রভাবশালী ও বলিষ্ঠ। তার মতো করে আর কেউই চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে পারতেন
না। কিন্তু দিলীপ কুমার তার কণ্ঠকে নিচু স্বরে এমন অভিজাতভাবে ও দৃঢ়তার
সঙ্গে সংলাপ ছুঁড়ে দিতেন যা দর্শকের ভক্তি কুড়িয়েছে।

দিলীপ কুমার, রাজ কাপুর ও দেব আনন্দকে বলা হতো ‘ত্রিমূর্তি’ বা
চলচ্চিত্রের তিন বিখ্যাত আইকন। কিন্তু দিলীপ কুমারের মতো বহুমাত্রিক
অভিনয় দক্ষতা রাজ কাপুর ও দেব আনন্দের ছিলো না।

রাজ কাপুরের রোল মডেল ছিলো চার্লি চ্যাপলিন আর দেব আনন্দ কখনো গ্রেগরি
পেকের প্রভাব থেকে বেরুতে পারেননি।

দেবিকা রানী তাকে সিনেমায় এনেছিলেন

গঙ্গা যমুনায় অশিক্ষিত এক গ্রামীণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমার
এবং সেখানেও তিনি এতো সাবলীল ছিলেন যেমনটি তিনি ছিলেন মুঘল ই আযমে
প্রিন্স সালিমের চরিত্রে। দেবিকা রানীর সঙ্গে এক দুঃখজনক সাক্ষাৎ
পরিবর্তন এনে দেয় দিলীপ কুমারের জীবন।

যদিও চল্লিশের দশকে দেবিকা রানী নিজেই ছিলেন ভারতীয় সিনেমার বিশাল
তারকা। কিন্তু তারপরেও সম্ভবত হিন্দি সিনেমায় তার বড় অবদান হলো
পেশওয়ারের ফল বিক্রেতার ছেলে ইউসুফ খানকে দিলীপ কুমারে পরিণত করা।

সুদর্শন ইউসুফ খান প্রায়ই মুম্বাই যেতেন সিনেমার শুটিং দেখতে এবং
সেখানেই দেবিকা রানীর চোখে পড়েন। তিনি দিলীপ কুমারের কাছে জানতে চান যে
তিনি উর্দু পারেন কিনা। যখনি বললেন যে হ্যাঁ পারেন তারপরের প্রশ্নই ছিলো
তুমি অভিনেতা হতে চাও কি-না। আর এর পরেরটুকু হলো ইতিহাস।

দিলীপ কুমার হয়ে ওঠার গল্প

দেবিকা রানী জানতেন যে ইউসুফ খান নামটি একজন রোমান্টিক হিরোর জন্য
মানানসই হবে না। সুপরিচিত হিন্দি কবি নরেন্দ্র শর্মা ওই সময় বোম্বে
টকিজের জন্য তখন কাজ করতেন। তিনি তিনটি নাম প্রস্তাব করেন- জাহাঙ্গীর,
ভাসুদেব ও দিলীপ কুমার। ইউসুফ খান এর মধ্যে দিলীপ কুমার নামটিই পছন্দ
করেন নিজের জন্য। আর তার নাম পরিবর্তনের আরেকটি বড় কারণ ছিলো। সেটি হলো
যাতে করে তার রক্ষণশীল বাবা তার এই নতুন পেশার কথা যেন না জানতে পারেন।
তার বাবা ফিল্ম পেশাজীবীদের নিয়ে খুব একটা চিন্তা করেননি। বরং তিনি
তাদের নিয়ে তামাশা করতেন। মজার বিষয় হলো পুরো ক্যারিয়ারে দিলীপ কুমার
মাত্র একবার মুসলিম চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং সেটি হলো মুঘল ই আযম।

সেতার শেখার প্রশিক্ষণ

ছয় দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৬৩টি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন কিন্তু
প্রতিটিতে তিনি নিজেকে পুরোপুরি চরিত্রের সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন। উস্তাদ
আব্দুল হালিম জাফর খানের কাছ থেকে কয়েক বছর সেতার শিখেছেন আর এটা করেছেন
তিনি কোহিনূর সিনেমার একটি চরিত্রের জন্য যেখানে একটি গানের সাথে তাকে
সেতার বাজাতে হতো।

বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘শুধু কিভাবে সেতার ধরতে হয় তা
জানতে আমি কয়েক বছর ধরে সেতার বাজানো শিখেছি। এমনকি সেতারের তারে আমার
আঙ্গুল আঘাত পেয়েছিলো’।

দিলীপ কুমার লতা মুঙ্গেশকরের সঙ্গে দ্বৈত সঙ্গীত গেয়েছেন যা সলিল চৌধুরী
লিখেছিলেন হৃষিকেষ মুখার্জির মুসাফির ছবির জন্য।

একই সঙ্গে দিলীপ কুমার টোঙ্গা (ঘোড়ার গাড়ি) চালনা শিখেছিলেন টোঙ্গা
চালকদের কাছ থেকে আর এটি তিনি করেছিলেন নয়াদৌড় সিনেমার একটি চরিত্রে
অভিনয়ের জন্য। আর এসব কারণেই বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়
দিলীপ কুমারকে বলেছিলেন ‘মেথড অ্যাক্টর’ অর্থাৎ যিনি চরিত্রের সাথে মিশে
যান।

অনেক সিনেমায় রোমান্টিক চরিত্রে অনেক অভিনেত্রীর সঙ্গেই অভিনয় করেছেন
দিলীপ কুমার। অনেকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো কিন্তু সেটি বিয়ে
পর্যন্ত গড়ায়নি। সম্ভবত নিজের জীবনের হৃদয় ভাঙার অভিজ্ঞতাই তাতে অনেক
চরিত্রে উদ্বুদ্ধ করেছে যা তাকে ট্রাজেডি কিং হিসেবে পরিচিত করিয়েছে।

অনেক ছবিতে তিনি মারা গেছেন এমন চরিত্রে অভিনয় করেছে। এমন সময় ছিলো যখন
প্রতি দুটি ছবির একটিতে তিনি এমন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এসব ছবিতে তিনি
তার মৃত্যুকে বাস্তবিক ও গ্রহণযোগ্য করে ফুটিয়ে তুলতে অনবদ্য অভিনয়
করেছেন।

দিলীপ কুমার বিবিসিকে বলেছেন, ‘একটা সময় ছিলো যখন মৃত্যুর দৃশ্য করতে
গিয়ে আমি ডিপ্রেসড হয়ে যেতাম। বিষণ্ণতা কমাতে আমাকে চিকিৎসা নিতে
হয়েছিলো। চিকিৎসক আমাকে ট্রাজেডি বাদ দিয়ে কিছু কমেডি সিনেমায়
অভিনয়ের পরামর্শ দিয়েছিলেন। লন্ডন থেকে বিষণ্ণতার চিকিৎসা নিয়ে ফেরার
পর আমি কোহিনুর, আজাদ, রাম অর শ্যাম সিনেমায় অভিনয় করেছিলাম যেগুলোতে
কিছুটা কমিক উপাদান ছিলো’।

মধুবালার সঙ্গে ভালোবাসা ও দ্বন্দ্ব

সাতটি ছবিতে নার্গিসের সঙ্গে জুটি ছিলো দিলীপ কুমারের। কোন একক
অভিনেত্রীর সঙ্গে এটাই ছিলো সবচেয়ে বেশি জুটি তার। কিন্তু মধুবালার
সঙ্গে তার জুটি বেশি জনপ্রিয় হয়েছিলো এবং তিনিও মধুবালার প্রেমে
পড়েছিলেন।

আত্মজীবনীতে তিনি স্বীকার করেন যে অভিনেত্রী ও নারী হিসেবে মধুবালা তাকে
আকর্ষণ করেছিলো।

তিনি বলেন, ‘মধুবালা ছিলেন প্রাণবন্ত ও তৎপর যার আমার মতো সংকোচবোধ করা
কারও সঙ্গেও কথা বলতে কোনো সমস্যা হতো না’। কিন্তু মধুবালার বাবার কারণে
তার প্রেমের গল্প বেশিদূর এগোয়নি।

মধুবালার ছোট বোন মাধুর ভূষণ স্মরণ করেন যে, ‘বাবা মনে করেছিলেন যে দিলীপ
কুমার মধুবালার চেয়ে বেশি বয়সী হয়ে যান যদিও তাঁরা ছিলেন একে অপরের
জন্য’।

‘কিন্তু সে বাবাকে শুনেনি কারণ সেও দিলীপ কুমারের প্রেমে পড়েছিলো।
কিন্তু বি আর চোপড়ার নয়া দৌড় সিনেমা নিয়ে আইনগত সমস্যার উদ্ভব হলে
বাবা ও দিলীপ কুমারের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়। পরে তারা আদালতে গিয়ে
সমঝোতায় পৌঁছেছিলেন’।

‘এরপর দিলীপ মধুবালাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। মধুবালা বলেন যে, আমি তোমাকে
বিয়ে করবো কিন্তু প্রথমে তোমাকে বাবার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।
কিন্তু দিলীপ তা মানতে রাজি হননি।   তিনি এমনকি বলেছিলো যে দিলীপ বাড়িতে
গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরুক কিন্তু তাতেও রাজি হননি দিলীপ এবং তাদের
সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়’। তাদের সম্পর্ক এতোটাই কঠিন হয়ে পড়ে যে মুঘল ই
আযম সিনেমায় অভিনয়ের সময় তারা একে অপরের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতেন না।

দিলীপ কুমার সায়েরা বানুকে বিয়ে করেন। পরে যখন মধুবালা অসুস্থ হয়ে
পড়েন তখন তিনি দিলীপ কুমারকে বার্তা পাঠান যে তিনি তার সঙ্গে দেখা করতে
চান। দিলীপ যখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন তখন অসুস্থতার কারণে মধুবালা
খুবই শীর্ণ। সাধারণত মজার ও প্রাণবন্ত মধুবালা অনেক কষ্টে যে হাসি
দিয়েছিলেন তাও খুব ফ্যাকাসে দেখাচ্ছিলো।

মধুবালা তার চোখের দিকে তাকালেন এবং বললেন, ‘আমাদের প্রিন্স তার
প্রিন্সেসকে পেয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত’। ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯,
মধুবালা মারা গেলেন। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ৩৫।

কপালে ভি-শেপে একগুচ্ছ চুল আছড়ে পড়া জাতীয় ক্রেজে পরিণত হলো।

দিলীপ কুমারের জীবনী লেখক মেঘনাথ দেশাই লিখেছেন, ‘আমরা তার চুলের স্টাইল,
পোশাক, সংলাপ এবং আচরণগুলো অনুকরণ করতাম। পর্দায় তার চরিত্রটা আমরা
আত্মস্থ করার চেষ্টা করতাম’।

তিনি সাদা রং পছন্দ করতেন। প্রায়ই সাদা জামা ও কিছুটা ঢোলা সাদা প্যান্ট
পড়তেন। উর্দু কবিতা ও সাহিত্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিলো তার। খুবই শিক্ষিত
মানুষ ছিলেন তিনি, যিনি একই সঙ্গে হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি, পাঞ্জাবী ও
পশতু ভাষা জানতেন। এমনকি মারাঠি, ভোজপুরি ও পার্সিয়ানও বুঝতেন ও কথা
বলতে পারতেন।

ক্রীড়ামোদী

দিলীপ কুমার তার তরুণ বয়সে ফুটবল খুব ভালোবাসতেন এবং উইলসন কলেজ ও খালসা
কলেজের ফুটবল টিমের সদস্য ছিলেন। পরে ক্রিকেটে তার আগ্রহ তৈরি হয়। লখনৌর
কেডি সিং বাবু স্টেডিয়ামে তিনি যখন মুশতাক আলী বেনিফিট ম্যাচ খেলছিলেন
তখন ওই শহরেই তাঁর গোপি সিনেমার প্রদর্শনী হচ্ছিলো। দিলীপ কুমার
ব্যাডমিন্টনও খুব পছন্দ করতেন। সঙ্গীত পরিচালক নওশাদ উদ্দিন খাঁর সাথে
প্রায়ই ব্যাডমিন্টন খেলতেন তিনি।

অনেক অ্যাওয়ার্ড আর প্রশংসা

১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ পদক পেয়েছিলেন দিলীপ কুমার। ২০১৬ সালে তিনি পেয়েছেন
ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খেতাব পদ্মবিভূষণ। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজনাথ সিং মুম্বাইতে তার বাসায় গিয়ে পদক হাতে তুলে দেন। এর আগে ১৯৯৫
সালে পেয়েছেন দাদাসাহেব ফালকে পুরষ্কার। অন্যদিকে ১৯৯৭ সালে পাকিস্তান
তাদের সর্বোচ্চ খেতাব নিশা-ই-ইমতিয়াজ দেয় দিলীপ কুমারকে। দিলীপ কুমার
নিয়মানুযায়ী ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর কাছ থেকে ওই
পদক গ্রহণের জন্য অনুমতি নিয়েছিলেন।

১৯৮১ সালে ক্রান্তি সিনেমায় অভিনয়ের সময় শারদ পাওয়ার ও রজনি প্যাটেল
তাকে শেরিফ অফ বোম্বে হওয়ার জন্য রাজি করিয়েছিলেন। শারদ পাওয়ার ও তার
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বাল সাহেব ঠাকরে দুজনের সাথেই বন্ধুত্ব ছিলো দিলীপ
কুমারের। ভারতের রাজনীতিকদের বাইরে আফগানিস্তানের রাজা জহির শাহ এবং
ইরানের শাহ রেজা পেহলভীও তাঁর খুব ভালো বন্ধু ছিলেন।

রাজ কাপুরের প্রশংসা

মুঘল ই আযমের পর দিলীপ কুমার বেশি প্রশংসা পেয়েছেন গঙ্গা যমুনার জন্য।
অমিতাভ বচ্চন বলেছেন তিনি সিনেমাটি অনেকবার দেখেছেন শুধু এটি দেখতে যে
উত্তর প্রদেশের সাথে যার কোন যোগসূত্র ছিলো না সেই পাঠান সন্তান কিভাবে
সেখানকার সঠিক স্থানীয় উচ্চারণে কথা বলেছেন। পরে দুজনই শক্তি সিনেমায়
অভিনয় করেছেন। তার সমসাময়িক প্রতিদ্বন্দ্বী ও শৈশবের বন্ধু রাজ কাপুর
ছবিটি দেখে ব্যাঙ্গালোর থেকে ফোন দিয়েছিলেন দিলীপ কুমারকে এবং বলেছিলেন,
‘বন্ধু আজ রায় এসেছে। তুমিই সেরা শিল্পী’।

সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..