আশুলিয়া হতে ৭ বছরের শিশু অপহরণের ০৩ দিন পর র্যাব-১৩ এর সহায়তায় কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ী হতে উদ্ধার করেছে র্যাব-৪ অপহরণকারী গ্রেফতার।
এসএম আলীরাজ হোসাইন, ভ্রম্যমান প্রতিনিধি,
গত ০৩ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখে ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায় যে, গত ০২ অক্টোবর ২০২২ তারিখ আনুমানিক সন্ধ্যা ০৬.০০ ঘটিকার সময় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া মীরবাড়ি এলাকা থেকে ০৭ বছরের শিশু আরাফাত হোসেন অপহৃত হয়। পরবর্তীতে অপহরণকারী অপহৃত শিশুটিকে আশুলিয়া, বাইপাইল হয়ে বাসযোগে কুড়িগ্রাম নিয়ে আটকে রাখে। শিশুটিকে অপহরণের পর অপহরকারী ভিকটিম শিশুটির মা’কে মোবাইল ফোনে ০১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং উক্ত টাকা না দিয়ে র্যাব বা পুলিশকে জানালে অপহৃত শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। প্রাপ্ত অভিযোগের তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল অদ্য ০৬ অক্টোবর ২০২২ তারিখ সকালে র্যাব-১৩ এর সহায়তায় কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানাধীন বোয়ালমারীচর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত শিশু ভিকটিম আরাফাত হোসেন’কে উদ্ধারপূর্বক অপহরণকারী মোঃ শফিকুল ইসলাম (৩৬), জেলা-কুড়িগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম শিশুটির মা একজন গামের্ন্টস্ কর্মী এবং স্বামী পরিত্যাক্তা। গ্রেফতারকৃত আসামীর সাথে ভিকটিমের মায়ের গত ৬/৭ মাস পূর্বে মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় হয় এবং পরিচয়ের এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের ফলে আসামীর ভিকটিমের বাসায় যাতায়াত ছিল। এরই এক পর্যায়ে আসামী ভিকটিমের মা’কে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। তখন ভিকটিমের মা আসামী’কে তার পূর্বের বউয়ের কথা জিজ্ঞেস করলে আসামী বলে আমি পূর্বের বউকে ডিভোর্স দিয়েছি। পরবর্তীতে ভিকটিমের মা গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ আসামীর বাড়িতে ঘুরতে যাই। বাড়িতে গিয়ে দেখে আসামীর স্ত্রী-সন্তান আছে এবং এরপরই ভিকটিমের মা আসামী’কে বলে যে আমি এই বিয়েতে রাজি না। তারপরও আসামী ভিকটিমের মা’কে বিয়ের জন্য বিভিন্নভাবে রাজি করার চেষ্টা করতে থাকে। এতে রাজি না হলে আসামী ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে শিশু ভিকটিম আরাফাত হোসেন (০৭)’ কে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ধৃত আসামী গত ০২ অক্টোবর ২০২২ তারিখ ভিকটিমের মা কাজে থাকার সুযোগে ভিকটিম’কে আইসক্রিম কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাসা থেকে বের করে জোরপূর্বক অপহরণ করে। ভিকটিমের মা রাতে বাসায় আসলে ছেলেকে দেখতে না পেলে আসামীকে মোবাইলে কল করলে আসামী জানায় সে আরাফাতকে অপহরণ করেছে, আরো জানায় যে, যদি আসামীকে ভিকটিমের মা বিবাহ করে এবং নগদ ১ লক্ষ টাকা প্রদান করে তাহলে ভিকটিম’কে সুস্থ অবস্থায় ফেরত দিবে অন্যথায় ভিকটিমকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের মা র্যাব-৪ এর অধিনায়ক বরাবর অভিযোগ করলে অবশেষে অদ্য ০৬ অক্টোবর ২০২২ তারিখ র্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল র্যাব-১৩ এর সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধারপূর্বক অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতেও এইরুপ শিশু অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।