সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন

অপহরণ মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও হুমকি দাতাদের আইনানুগ শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩৭ বার পঠিত

অপহরণ মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও হুমকি দাতাদের আইনানুগ শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

বান্দরবান প্রতিনিধি

অপহরণ মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও হুমকি দাতাদের আইনানুগ শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী মো:সোহেল উদ্দিন ও তার পরিবারবর্গ ।
০৩ নভেম্বর ২০২৪ বান্দরবান জেলা প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
গত ২১/০৮/২০২৪ ইং তারিখে অনুমান সকাল ৭.২৫ মিনিট আমি বান্দরবান হইতে আমার কর্মস্থলে যাওয়ার পথে কেরানীহাটস্থ সাতকানিয়া রাস্তার মাথা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করিতে থাকিলে একটি সাদা মাইক্রো গাড়ী আসিয়া বাদীর সম্মুখে দাড়ায় এবং মাইক্রো বাসের সামনে বসা হেলপার পরিচয় দানকারী অজ্ঞাত ব্যক্তি আমাকে কোথায় যাবে মর্মে জিজ্ঞেস করে, বাদী উক্ত অজ্ঞাত ব্যক্তিকে কক্সবাজার যাইবে মর্মে অবগত করিলে উক্ত অজ্ঞাত ব্যক্তি আমাকে গাড়ীতে উঠিতে বলে। আমার সাথে ভাড়ার দর দাম ঠিক করিয়া মাইক্রো গাড়ীর মাঝা মাঝি অংশের আসনে বসলে প্রথমে দুইজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে দেখিতে পায় এবং পিছনের সিটে ১নং আসামী সেতু চাকমাকে ও ২নং আসামী সামনের সিটে শাহিন শাহ্ আফ্রিদিকে ব্যক্তিকে দেখিতে পাই। আমি সরল বিশ্বাসে মাঝামাঝি সিটে বসার সাথে সাথে গাড়ী দ্রুত গতিতে চলিতে শুরু করে। তৎপর পিছন হইতে ১নং আসামী জিজ্ঞাসা করে যে বাদীর সংসার কেমন চলিতেছে? আমি হতচকিয়ে যাই এবং অনুমান করি যে, আমার সাথে খারাপ কিছু ঘটিবার সম্ভাবনা রহিয়াছে। আমি তৎক্ষণাত আমার ব্যবহৃত এন্ড্রয়েড ফোন বের করিয়া আমার পিতাকে ম্যাসেজ দেওয়ার চেষ্টা করিলে পাশে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তি আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়া নেন। তৎপর অপরাপর আসামীগণ আমাকে ছুরিধারা হত্যা করিবে মর্মে ভয় দেখাইয়া নড়াচড়া করিতে বারণ করিয়া আমার হাত, পা ও চোখ-মুখ বাঁধিয়া ফেলে। উক্ত মাইক্রো গাড়ী অনুমান ১ ঘন্টা যাবৎ চলার পর আমাকে গাড়ী হইতে নামায়া একটি রুমে বন্দী করিয়া রাখে। তৎপরবর্তীতে দীর্ঘ সময় যাহা দুই একদিনের কম না বাদীকে চোখ বন্ধ অবস্থায় খাবার পানি ছাড়া উক্ত রুমে ফেলিয়া রাখে। আমার মুখ বন্ধ থাকায় বাদী চিৎকার করিয়া কাহারো নিকট কোন সাহায্য চাইতে পারি নাই। উক্ত দীর্ঘ সময়ের পর যাহা দুই একদিনের কম নয়, ১নং ও ২নং এবং অজ্ঞাত আসামীগণ আমার চোখের বাধন খুলিয়া দেয় এবং কোন প্রকার আওয়াজ করিলে জানে মারিয়া ফেলিবে বলিয়া ১নং আসামী হাতে থাকা একটি বড় চুরি আমার গলায় ধরে। আসামীগণ আমার মুখের বাধন খুলিয়া দিয়া আমার নিকট রক্ষিত পেনড্রাইভটি কোথায় জানিতে চায়, আমি কোন পেনড্রাইভ জিজ্ঞেস করিলে ১ ও ২নং আসামী আমাকে এলোপাতাড়ী খিল ঘুষি মারিতে থাকে এবং ধারালো ছুরি দ্বারা বাদীর শরীরে রক্তাক্ত কাটা জখম করে। আমি প্রাণ বাচাতে চিৎকার করিতে চাইলে আসামীগণ আমাকে গলায় ছুরি ধরিয়া কোন প্রকার শৌর চিৎকার করিতে নিষেধ করে। তৎপর আসামীগণ আমাকে খাবার প্রদান করে এবং খাওয়া শেষে পেনড্রাইভ ও ৫ লক্ষ টাকার মুক্তিপন দাবীতে আমাকে মারধর করেন। আসামীগণ বলে যে, তথ্য সংরক্ষিত পেনড্রাইভ ও নগদ ৫ লক্ষ টাকা প্রদান না করিলে তুকে জানে মেরে ফেলবো। ১ ও ২নং আসামীগণসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন ব্যক্তির প্রতিনিয়ত অত্যাচার ও মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করিতে না পারিয়া আমার নিকট চলমান রক্ষিত পেনড্রাইভ আসামীদের দিয়ে দেয়। পেনড্রাইভ হাতে পাওয়ার পর ২নং আসামী ও ১নং আসামী অপরাপর আসামীদের সাথে মোবাইলে কথা বলিবার সময় আমি শুনিতে পায় যে, ৫ লক্ষ টাকা না দিলে আমাকে জানে মারিয়া ফেলিবে, আমি আসামীগণের নিকট প্রাণ ভিক্ষা চাইলে ২নং আসামী আমার গলা চাপিয়া ধরে এবং ৫ লক্ষ টাকা না দিলে আমাকে জানে মারিয়া ফেলিবে বলে হুমকি দেয়। উক্ত ঘটনার দীর্ঘ সময় পরে আসামীগণের মোবাইলে একটি কল আসে এবং আসামীগণ এতে আতংকিত হইয়া বলে যে, যেকোন সময় সেনাবাহিনীর অভিযান পরিচালিত হইতে পারে। আমাদের আমাকে অন্যত্র সরাইয়া ফেলিতে হইবে অথবা হত্যা করিয়া লাশ গুম করিতে হইবে, না হয় আমরা ধরা পরিয়া যাইব।
তৎপর ১ ও ২নং আসামী সহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন ব্যক্তির সাথে আলাপ আলোচনা করিয়া আমাকে হত্যা করিয়া নদীতে লাশ ফেলিয়া দেয়ার উদ্দেশ্যে হাত-পা বাধিয়া ফেলেন এবং আমার শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করে গাড়িতে তুলে। ইহার কিছুক্ষনের মধ্যেই আমার শরীর নিস্তেজ হইয়া পড়ে। তৎপর আমি আমার শরীরে ধস্তাধস্তী অনুভব করি এবং আমার আবছা জ্ঞান ফিরিয়া আসিলে আমি বুঝিতে পারি যে, আমাকে গাড়ী হইতে নামানো হইয়াছে। ১নং ও ২নং আসামীসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের সহায়তায় আমাকে ব্রীজ হইতে ফেলিয়া দেওয়ার চেষ্টা করিতে থাকিলে দূর হইতে কয়েকজন মানুষের আসার ও গাড়ি চলাচলের আওয়াজ শুনিতে পায় তখন আঊ বুঝিতে পারি যে, কেউ হয়ত আমাকে উদ্ধার করিতে আসিতেছে। আমি ও আসামীগণের সহিত ধস্তাধস্তি করিতে থাকিলে ১ ও ২নং আসামী আমাকে লাথি ও খিল ঘুষি মারিয়া ফেলিয়া দেয় এবং বলে যে, “আজকে তুকে প্রানে মেরে ফেলব, তুই যদি বা বেঁচে ফিরিস তুর স্ত্রী, শ্বশশ্বাশুড়ীর সাথে কোন প্রকার ঝামেলা করিলে পরের বার আর প্রাণ নিয়া ফিরিতে পারবি না” বলিয়া আসামীগণ দ্রুত তাহাদের আনিত গাড়িতে করিয়া পালিয়া যায়। তৎপর স্থানীয় লোকজন ও পথচারী গাড়ির ড্রাইভার ও উপস্থিত সাক্ষীগণ আসিয়া আমর চোখ, মুখ ও হাতপায়ের বাধন খুলিলে আমি বুঝিতে পারে যে, ইহা দোহাজারী ব্রীজ এবং আসামীগণ আমাকে উক্ত ব্রীজ হইতে ফেলিয়া হত্যার চেষ্টা করিতেছিল। তৎপর ১নং সাক্ষী তার নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে ৯৯৯ ফোন করে কিন্তু কোন প্রকার সাহায্য না পাইয়া সেনাবাহিনীকে ফোন করে এবং তাদের সাহায্যে সি.এস.জি চালিত গাড়িতে করে দোহাজারী হাসপাতালে ভর্তি করে। তৎপরবর্তী সময়ে আমার বাবা তথা সাক্ষী ও এলাকার ইউপি সদস্য সহ অপরাপর সাক্ষীগণ হাসপাতালে হাজির হয়। উক্ত হাসপাতালে আমার অবস্থার অবনতি হইলে দায়িত্বরত ডাক্তার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। তৎপর আমার বাবা রেফারকৃত হাসপাতালে ভর্তি করায়। উক্ত হাসপাতালে ০৬/০৯/২৪ ইং তারিখ হতে ১২/০৯/২০২৪ ইং তারিখ পর্যন্ত ভর্তি ছিলাম। আমি হাসপাতাল থেকে রিলিজ হওয়ার পর একের পর এক বিভিন্ন প্রশাসনের কার্যালয়ে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের এখতেয়ার নয় বলিয়া অন্য জায়গায় দেখিয়ে দেন। বর্তমানে আমার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লোন নেওয়া হয়েছে। আমাদের আর্থিক অবস্থা দিন দিন খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে আমি এক জন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি কি একটা সুস্থ বিচার পেতে পারি না? এতো কিছু হওয়ার পরেও আমি পারিবারিক স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক পুনঃ উদ্ধার জন্য চেষ্টা করেছি ঝামেলায় না জড়িয়ে অতঃপর এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মহোদয় বলেছি সমাঝোতা করে দেওয়ার জন্য কিন্তু পক্ষান্তরে আসামি পক্ষ এখনো হুমকি দিচ্ছে আমার নামে মিথ্যা মামলা করছে বলে এবং আমি সর্ব শেষ বাধ্য হয়ে চট্টগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে মামলা করি ।
আদালত থেকে আদেশ দেন তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (PBI) কে । আমি চাই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমি সঠিক বিচার ও আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জোর দাবি জানাচ্ছি । বর্তমানে আমার পরিস্থিতিতে খুবই ভয়াবহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে এই নিয়ে আসামীদের দ্বারা তিন বার আক্রমণের শিকার হয়েছি যে কোনো মুহূর্তে আমার জীবন নাশ হতে পারে। আমি দিন দিন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতেছি এবং রাত্রে ঘুমাতে পারি না ভয়ে সব সময় একটা আতংকের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে আমার সময়। যদি এমতাবস্থায় আসামীদের দ্বারা আমার জীবন নাশ বা আমার কোনো কিছু হয়ে যায় তার জন্য কে দায়ী হবে?
বাংলাদেশে বসবাস করে যদি নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এলাকার চৌকিদার থেকে শুরু করে মহল্লার সর্দার মেম্বার চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশ সেনাবাহিনী আইন প্রশাসক এবং বিজ্ঞ আদালত কেউ কার্যকারী পদক্ষেপ না নেন এক জন সাধারণ মানুষ বিপদে পড়লে মৃত্যু ছাড়া তো তার আর কোনো উপায় নেই। এক জন মানুষের মূল তখনই বেড়ে যায় যখন সে মৃত্যুবরণ করেন উল্লেখ্য যে, আমার অপহরণ বা গুম থাকা অবস্থায় আমার পিতা লোহাগাড়া থানায় একখানা নিখোজ ডায়েরী করেন যাহার নাম্বার- ৭৮৩, জি.ডি ট্র্যাকিং নং- OWFYT4, যাহার কোনো তদারকি করা হয়নি।
অতএব, সবার কাছে আমার একটাই প্রার্থনা যে, বিজ্ঞ আদালত বা যে কোনো আইন প্রশাসন দেশের সাধারণ জনগণের হইয়া আইন ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমার আনীত অভিযোগ সরাসরি আমলে নিয়ে আসামীগণের বিরুদ্ধে সুস্থ ফয়সালর মাধ্যমে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা বা একটা সুস্থ সমাধান দেওয়া হোক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এ জাতীয় আরো খবর..